খুলনা বিভাগ

সাতক্ষীরায় পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক রফিকুলের বয়স জালিয়াতি

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা | June 23, 2025

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক জিএম রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে জন্মতারিখ জালিয়াতির মাধ্যমে চাকরির অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া তার পাঁচ সহকর্মীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা হাবিবুল ইসলাম ও আসমত আলী জানান, রফিকুল ইসলাম ১৯৮৬ সালে গাবুরা গাইনবাড়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। তখন তার বয়স ছিল ১৬ বছর। কিন্তু চাকরির বয়সসীমা পার হওয়ার আগে তিনি জন্মতারিখ পরিবর্তন করে জাতীয় পরিচয়পত্রে ১ নভেম্বর ১৯৮৬ দেখান। পরবর্তীতে ২০০২ সালে গাবুরা নিজামিয়া দাখিল মাদ্রাসা থেকে দাখিল (জিপিএ ৩.৬৭) এবং ২০০৪ সালে কয়রা কপোতাক্ষ কলেজ থেকে এইচএসসি (জিপিএ ২.৬০) পাসের সনদ নেন।

অভিযোগ রয়েছে, ২০১২ সালে তৎকালীন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রীর আত্মীয়ের সহায়তায় তিনি আর্থিক সুবিধা দিয়ে চাকরিতে যোগ দেন। বর্তমানে তিনি নিয়মিত অফিস না করেও চাকরিতে বহাল আছেন এবং সরকারি সুবিধা ভোগ করছেন।

রফিকুলের মতো তার সহকর্মী নূরনগরের আবু আল শাহ আলম, পদ্মপুকুরের এসকে নূরন্নবী, আটুলিয়ার রক্তিম ইসলাম, ভুরুলিয়ার মহিউদ্দিন আহম্মেদ এবং বুড়িগোয়ালিনির জিল্লুর রহমানের বিরুদ্ধেও রয়েছে নানা অনিয়মের অভিযোগ।

অভিযোগ রয়েছে, এরা প্রভাব খাটিয়ে ভুয়া টিএ বিল উত্তোলন করেছেন। যেমন, আবু আল শাহ আলম কেন্দ্র থেকে মাত্র আট কিলোমিটার দূরত্বের জন্য ১৩ হাজার টাকার টিএ বিল তুলেছেন। একইভাবে রফিকুল ইসলামসহ অন্য চার জনও এই সুবিধা নেন।

এসকে নূরন্নবীর বিরুদ্ধে চাকরি দেওয়ার নামে টাকা হাতিয়ে নেওয়া এবং চেক ডিজঅনারের মামলা রয়েছে। তার বিরুদ্ধে মাদকাসক্তির অভিযোগও শোনা যায়।
রক্তিম ইসলামের বিরুদ্ধে সরকারি খাস জমি দখল করে দোকান ঘর নির্মাণের অভিযোগ রয়েছে।
মহিউদ্দিন আহম্মেদ নিজের কাজ এফডব্লিউএ চন্দনা সরকারকে দিয়ে করান এবং ঋণে জর্জরিত হয়ে পড়েছেন।
জিল্লুর রহমান নিজের শ্বশুরবাড়ি এলাকায় আত্মগোপনে থেকেও চাকরি করছেন, তার রাজনৈতিক প্রভাব কাজে লাগিয়ে এফডব্লিউএ কর্মীদের ব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের সহকারী পরিচালক ডা. প্রবীর মুখার্জীর নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। ১০ কার্যদিবসের মধ্যে রিপোর্ট দেওয়ার কথা থাকলেও ২৩ জুন ২০২৫ পর্যন্ত তদন্ত প্রতিবেদন জমা পড়েনি।

রফিকুল ইসলাম বলেন, “কাজে ভুল-ত্রুটি থাকতেই পারে। তবে সব অভিযোগ সঠিক নয়।”
শ্যামনগর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শাকির হোসেন বলেন, “দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলায় আমাকেও নানা ভাবে হেনস্তা করা হয়েছে। অভিযোগ পেলে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।”

Shadhin Alo