‘গুম ও মানবতাবিরোধী অপরাধে’ জড়ানোর অভিযোগে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের বিচারের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। রোববার সকালে ফেইসবুকে এক পোস্টে তিনি এই প্রক্রিয়াকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।
শফিকুর রহমান লিখেছেন, ‘গুম ও খুনের সঙ্গে জড়িত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কতিপয় কর্মকর্তাকে বিচারের আওতায় আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে নিয়ে জনগণ গর্বিত থাকতে চান। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য, এই বাহিনীর কিছু সদস্য দেশের বিদ্যমান আইন ও মানবাধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শনে ব্যর্থ হয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের প্ররোচণায় প্রতিপক্ষ নিধনের এজেন্ডা বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ছিলেন অন্ধ সহযোগী। ফলে গুম এবং খুনের ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিল, যা জাতির জন্য দুর্ভাগ্যের বিষয়। তবে কয়েকজনের অপরাধের কারণে পুরো প্রতিষ্ঠানকে কলঙ্কিত করা যাবে না। অপরাধের দায় কেবল সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ওপরই বর্তাবে।’
শফিকুর রহমান আশা প্রকাশ করেছেন, ‘স্বচ্ছ বিচারপ্রক্রিয়ার মাধ্যমে অপরাধীরা যথাযথ শাস্তির মুখোমুখি হবেন। এতে অতীতের দায় মুছে যাবে এবং ভবিষ্যতে কেউ নিজের পেশা বা পরিচয়কে কাজে লাগিয়ে জনগণের ক্ষতি থেকে বিরত থাকবে। পরিণতিতে দীর্ঘমেয়াদে জাতি উপকৃত হবে।’
সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে ১৫ কর্মকর্তাকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। এই তথ্য শনিবার সেনা সদরে এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় অ্যাডজুটেন্ট জেনারেল মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামানের মাধ্যমে।
আওয়ামী লীগের শাসনামলে বিরোধী মতের লোকদের গুম ও নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের দুই মামলায় গত বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ৩০ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। এর মধ্যে র্যাবের টাস্কফোর্স ইন্টারোগেশন সেলে আটকে রাখা ১৭ জন এবং জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলে বন্দি রাখা ১৩ জন। প্রধান আসামি হিসেবে করা হয়েছে জুলাই অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে, যার সঙ্গে আছেন অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল তারিক আহমেদ সিদ্দিকী ও ডিজিএফআইয়ের সাবেক পাঁচ মহাপরিচালক।
সেনা কর্মকর্তাদের বিচারের এই উদ্যোগকে দেশপ্রেমিক ও মানবাধিকার সংরক্ষকদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।