ভারতে পাচারের শিকার ৩৬ বাংলাদেশি শিশু-কিশোরকে বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ফেরত পাঠিয়েছে ভারতীয় পুলিশ।
মঙ্গলবার (২৭ মে) বিকেলে ভারতের পেট্রাপোল চেকপোস্ট দিয়ে তাদের বাংলাদেশের বেনাপোল চেকপোস্টে হস্তান্তর করা হয়।
এসময় কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রতিনিধি, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা, উপজেলা প্রশাসন এবং বিভিন্ন বেসরকারি মানবাধিকার সংগঠনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ফেরত আসা শিশু-কিশোরদের মধ্যে ১৪ জন নারী এবং ২২ জন পুরুষ রয়েছে। তাদের বয়স ১০ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে। এসব শিশু-কিশোরদের বাড়ি যশোর, খুলনা, ঢাকা ও নড়াইল জেলার বিভিন্ন এলাকায়।
মানবাধিকার ও এনজিও সংস্থা জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ার, মহিলা আইনজীবী সমিতি, রাইটস এবং মানব উদ্ধার ও শিশু সুরক্ষা সংস্থা সীমান্ত থেকেই আইনি সহায়তা প্রদানের জন্য তাদের গ্রহণ করে। জানা গেছে, এই ৩৬ জন বিভিন্ন সময়ে অবৈধভাবে সীমান্ত পার হয়ে ভারতে প্রবেশ করার পর সেদেশের পুলিশের হাতে আটক হন।
বেনাপোলে আটকা গার্মেন্টস পণ্য বোঝাই ৩৬ ট্রাক
পাচারের শিকার এসব শিশু-কিশোরকে উদ্ধারের পর দেশে ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশ ও ভারতের সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন মানবাধিকার ও এনজিও প্রতিষ্ঠান কাজ করেছে। ভারতে আটকের পর আইনি জটিলতার কারণে কেউ কেউ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন সরকারি হোমে দুই থেকে আট বছর পর্যন্ত অবস্থান করেন। পরে দুই দেশের সরকারের মধ্যে স্বদেশ প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তারা দেশে ফেরার সুযোগ পান।
চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার ইয়াহিয়া নামের এক ব্যক্তি তার নবম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়েকে ফেরত নিতে বেনাপোলে এসেছেন। তিনি জানান, একটি দালাল চক্র চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে তার মেয়েকে ভারতে পাচার করে বিক্রি করে দেয়।
মানব উদ্ধার ও শিশু সুরক্ষা সংস্থার চেয়ারম্যান সৈয়দ খায়রুল আলম জানান, আজ যারা ফিরেছে, তাদের মধ্যে ৬ জনকে তিনি আইনি সহায়তার জন্য গ্রহণ করেছেন।
তিনি বলেন, পাচারের পর তাদের অনেককে ভারতে বিক্রি করে দেয়া হয়েছিলো। কাউকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে আবার কাউকে কাজের প্রলোভনে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাদের দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করানো হতো।
বেনাপোল ইমিগ্রেশনের উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহাদাৎ হোসেন জানান, ভারত থেকে ফেরত আসা ৩৬ জন বাংলাদেশি শিশু-কিশোরকে আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
স্বাআলো/এস