গত নভেম্বরে সারাদেশে ৫৬৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৭৫ জন নিহত হয়েছেন। এরমধ্যে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে ১৭৩ জনের। ৫ ডিসেম্বর বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।
বেশ কয়েকটি কারণে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে। এগুলোর মধ্যে বেপরোয়া গতি, বিপদজ্জনক অভারটেকিং, ফিটনেসবিহীন যানবাহনের অবাধে চলাচল, যাত্রী ও পথচারীদের অসতর্কতা, চালকের অদক্ষতা ও বেপরোয়া মনোভাব, মাদক সেবন করে যানবাহন চালানো, রাস্তায় ফুটপাত না থাকা বা ফুটপাত বেদখলে থাকা, ট্রাফিক আইনের দুর্বল প্রয়োগ ও ট্র্রাফিক আইন অমান্য করা, ছোট যানবাহনের ব্যাপক বৃদ্ধি, রাস্তার পাশে হাট-বাজার, ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন রাস্তায় নামানো, চালকের নিয়োগ ও কর্মঘণ্টা সুনির্দিষ্ট না থাকা, দেশব্যাপী নিরাপদ ও আধুনিক গণপরিবহন ব্যবস্থার পরিবর্তে নসিমন-ইজিবাইক-ব্যাটারিচালিত রিকশা, মোটরসাইকেল, সিএনজি অটোরিকশা নির্ভর গণপরিবহন ব্যবস্থার দিকে ধাবিত হওয়ার কারণে সড়কে দুর্ঘটনা ক্রমবর্ধমান।
বেপরোয়া গাড়ি চালিয়ে দুর্ঘটনা ঘটিয়ে প্রাণহানির দায়ে চালকের বিচার ও শাস্তি হয় না। এমনকি শাস্তির দাবি উঠলে কিংবা মামলা হলে শ্রমিকরা বেআইনীভাবে আন্দোলন শুরু করে। আইনকে নিজস্ব গতিতে হাঁটার ক্ষেত্রে বাধা দেয়ার বিরুদ্ধে সর্বপ্রথমে আইন প্রণয়ন করতে হবে। কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা গেলে দুর্ঘটনা কমে আসবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সড়ক পরিবহনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে গাড়িতে বিকল্প চালক রাখা, একজন চালকের ৫ ঘণ্টার বেশি গাড়ি না চালানোসহ ৬ দফা নির্দেশনা দিয়েছিলেন। নির্দেশনার মধ্যে ছিলো গাড়ির চালক ও তার সহকারীদের প্রশিক্ষণ দেয়া, নির্দিষ্ট দূরত্বে সড়কের পাশে সার্ভিস সেন্টার বা বিশ্রামাগার তৈরি, অনিয়মতান্ত্রিকভাবে রাস্তা পারাপার বন্ধ করা বা সিগন্যাল মেনে পথচারী পারাপারে জেব্রা ক্রসিং ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং যাত্রীদের সিটবেল্ট বাধা নিশ্চিত করা। দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মিছিল এভাবে আর চলতে দেয়া যায় না। এখনই এর রশি টেনে ধরতে হবে। সেই সাথে পর্যালোচনা দেখতে হবে দুর্ঘটনা রোধে প্রধানমন্ত্রীর যথোপযুক্ত নির্দেশনাগুলো দিয়েছিলেন তা কতটুকু পালিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা পালিত না হয় তাহলে কেন হচ্ছে না তা পর্যালোচনা করে দেখতে হবে।