Uncategorized

বাগেরহাটে অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর মৃত্যু নিয়ে রহস্য

| October 23, 2023

বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলার মোল্লারকুল গ্রামে কুলসুম আক্তার (১৯) নামের এক অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর মৃত্যু নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। গত ১৭ অক্টোবর দিনব্যাপী কুলসুম আক্তার বিষপানে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচার পায়। পার্শ্ববর্তী গোপালগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে তাকে মৃত ঘোষণা করার পর ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার জন্য অনেক গোপনীয়তা রক্ষা করা হলেও গোপালগঞ্জ হাসপাতালে ওই গৃহবধূর লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়েছে।

তবে সোমবার (২৩ অক্টোবর) সকালে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এ ঘটনায় মোল্লাহাট থানায় কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। এদিকে, গৃহবধূ কুলসুম আক্তারের মৃত্যুর পর থেকে তার স্বামী ও শ্বশুর পলাতক রয়েছেন।

এলাকাবাসী জানায়, গত প্রায় আড়াই বছর পূর্বে উপজেলার সরসপুর গ্রামের আলমগীর শেখের মেয়ে কুলসুমের সাথে একই উপজেলার মোল্লারকুল গ্রামের ফিরোজ কাজীর ছেলে সজিব কাজীর বিবাহ হয়। বিবাহের পর থেকেই কুলসুমকে বিভিন্ন সময়ে শারীরিক নির্যাতন চালাতো তার স্বামী ও শ্বশুর। ঘটনার দিন মঙ্গলবার সকালে স্বামী সজিব বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় অন্তঃসত্ত্বা কুলসুমকে বলে গাছ থেকে সুপারি পাড়িয়ে ঘরে রাখতে। এরপর কুলসুম তার দেবর সাজ্জাদকে দিয়ে সুপারি পাড়িয়ে ঘরে রাখে। দুপুরের দিকে শ্বশুর ফিরোজ কাজী উক্ত সুপারি নিয়ে যায়। তখন শ্বশুরকে বলেন, আপনার ছেলে সুপারি পাড়িয়ে রাখতে বলেছে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে শ্বশুর ফিরোজ কাজী পুত্রবধূ কুলসুমকে মারপিট করে। এরপর বিকেলে সজিব বাড়ি ফিরে সুপারি চাইলে তার বাবা নিয়েছেন বলে জানান। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে স্বামী সজিবও কুলসুমকে বেধড়ক মারপিট করে। এরপর কুলসুম আক্তার বিষপান করেছে বলে তাকে নিয়ে গোপালগঞ্জ হাসপাতালে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক কুলসুমকে মৃত ঘোষণা করেন।

কুলসুমের বড় বোন হালিমা আক্তার জানান, তার ও কুলসুমের শ্বশুর বাড়ি কাছাকাছি হওয়ায় খবর শুনেই তিনি দ্রুত গোপালগঞ্জ হাসপাতালে গিয়ে দেখেন, মেঝেতে তার বোন কুলসুমের মরদেহ পড়ে আছে। তার স্বামী বা শ্বশুরসহ সকলে লাশ ফেলে পালিয়ে গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই দিন কুলসুমের স্বামী ও শ্বশুর দুই দফায় মারপিট করেছে। এরপর স্বামী সজিব, শ্বশুর ফিরোজ ও শাশুড়ী স্বপ্না বেগম কুলসুমের মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে প্রচার করেছে সে বিষপান করেছে।

কুলসুমের পিতা আলমগীর শেখ বলেন, আমার অন্তঃসত্ত্বা মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় একাধিকবার থানায় গিয়ে অভিযোগ করলেও পুলিশ অভিযোগ না নিয়ে ফিরিয়ে দিয়েছে।

তিনি বলেন, মেয়েকে হত্যাকাণ্ডের বিচার পেতে প্রয়োজনে উচ্চ আদালতে যাবো।

মোল্লাহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোমেন দাশ বলেন, সোমবার সকাল পর্যন্ত এ ঘটনায় কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। আর লাশের ময়নাতদন্ত হয়েছে। রিপোর্ট আসলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

স্বাআলো/এসএ

Shadhin Alo

Leave a Reply