আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্যদের মধ্যে নানা কারণে বিতর্কিতরা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার টিকিট পাচ্ছেন না। সেইসঙ্গে বাদ পড়ছেন বয়সের ভারে ন্যুব্জ নেতারা। এদের পরিবর্তে গুরুত্ব পাচ্ছেন স্বচ্ছ ভাবমূর্তিসম্পন্ন ও জনপ্রিয় নতুনরা। এই দুইটি দিক বিবেচনায় রেখেই বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ৭২টি আসনের দলের প্রার্থিতা চূড়ান্ত করেছে আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ড। এই দুই বিভাগের কয়েকজন সংসদ সদস্যকে বাদ দিয়ে বেছে নেয়া হয়েছে নতুন কিছু মুখ। অন্যান্য বিভাগের প্রার্থী বাছাইয়ের পর আগামীকাল শনিবার (২৫ নভেম্বর) নাগাদ আসবে চূড়ান্ত ঘোষণা।
প্রথম দিনের সভায় রাজশাহী বিভাগের ৩৯টি ও রংপুর বিভাগের ৩৩টি আসনের প্রার্থিতা চূড়ান্ত করেছে আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ড। শুক্রবার খুলনা, বরিশাল ও ময়মনসিংহ বিভাগের সবগুলো এবং ঢাকা বিভাগের কিছু আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে। ধারাবাহিকভাবে ৩০০ আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করার পর আনুষ্ঠানিকভাবে আগামী ২৫ নভেম্বর তালিকা ঘোষণা করবে আওয়ামী লীগ।
এ বিষয়ে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, বর্তমান সংসদ সদস্যদের মধ্যে কতজন বাদ পড়েছেন, এ মুহূর্তে আমি বলতে পারছি না। তবে বাদ পড়েছেন। প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য প্রার্থীকেই প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। তরুণদের বিষয়টিও গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার কিছু পর রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে দলের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভা শুরু হয়ে চলে দুপুর ২টা পর্যন্ত। সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ছাড়াও মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, মোশাররফ হোসেন, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কাজী জাফর উল্লাহ, আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ, রাশিদুল আলম, রমেশ চন্দ্র সেন, দীপু মণি, প্রচার সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া ও উপদফতর সম্পাদক সায়েম খান সভায় উপস্থিত ছিলেন। শারীরিকভাবে কিছুটা অসুস্থ থাকায় হুইল চেয়ারে করে সভায় যোগ দেন প্রবীণ নেতা তোফায়েল আহমেদ।
সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের একাধিক সদস্যের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে এবার জনপ্রিয়তাই হচ্ছে অন্যতম মাপকাঠি। ভোটারদের মধ্যে অধিক জনপ্রিয়তা, দলে গ্রহণযোগ্যতা, স্বচ্ছ ইমেজের প্রার্থীদের নৌকার মনোনয়ন দেয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
সূত্র আরো জানায়, প্রাথমিকভাবে ৩০০ আসনেই দলের প্রার্থিতা চূড়ান্ত করার পরিকল্পনা থাকলেও সমঝোতা সাপেক্ষে শরিক দলগুলোর জন্য কিছু আসন ছেড়ে দিয়ে ওইসব আসনের দলের প্রার্থীর মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হবে। রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে কয়টি আসন শরিকদের ছেড়ে দেয়া হবে, তা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়নি বলেও নিশ্চিত করেন মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য।
স্বাআলো/এসএ