ঢাকা অফিস: প্রশ্নফাঁসে দায় স্বীকার করেছে পিএসসির চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়ি চালক সৈয়দ আবেদ আলী জীবনসহ সাত আসামি।
মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পরে তাদের কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (৯ জুলাই) স্বেচ্ছায় এ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তারা।
আবেদ আলী ছাড়াও এ দায় স্বীকার করীরা হচ্ছেন- অফিস সহায়ক খলিলুর রহমান, অফিস সহায়ক (ডিসপাস) সাজেদুল ইসলাম, ব্যবসায়ী আবু সোলায়মান সোহেল, ব্যবসায়ী সহোদর সাখাওয়াত হোসেন, সায়েম হোসেন এবং লিটন সরকার।
প্রশ্নফাঁস: আবেদ আলীসহ ১৭ জনের ব্যাংক হিসাব জব্দ
এদিন গ্রেফতার ১৭ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। এর মধ্যে পিএসসির চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়ি চালক সৈয়দ আবেদ আলী জীবনসহ সাত আসামি স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হন। পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার জুয়েল চাকমা তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন।
আবেদন বলা হয়েছে, গ্রেফতার আসামিরা গত ৫ জুলাই বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন কর্তৃক আয়োজিত পরীক্ষার নাম- বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (বাংলাদেশ রেলওয়ে), পদের নাম- সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারের (নন ক্যাডার) নিয়োগ পরীক্ষার জন্য পরীক্ষা অনুষ্ঠানের নির্ধারিত সময়ের পূর্বে পরীক্ষার হুবহু প্রশ্নপত্র ফাঁস করে। একদল সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার (নন ক্যাডার) পদে নিয়োগ প্রার্থী পরীক্ষার্থীদের নিকট অর্থের বিনিময়ে প্রশ্ন এবং প্রশ্নের উত্তর বিতরণ করেছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা একটি সংঘবদ্ধ চক্র হিসেবে বিগত বছরগুলোর বিভিন্ন সময়ে বিসিএসসহ পিএসসির বিভিন্ন গ্রেডের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র অর্থের বিনিময়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠানের নির্ধারিত সময়ের পূর্বে পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত বলে স্বীকার করেছে।
সরকারি জমি দখল করে আবেদ আলীর ডেইরি ফার্ম
সোমবার (৮ জুলাই) বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (বিসিএস) পরীক্ষাসহ ৩০টি নিয়োগের প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আলোচনায় আসা সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) সাবেক চেয়ারম্যানের গাড়ি চালক সৈয়দ আবেদ আলী ও দুই পরিচালকসহ ১৭ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
এ তালিকায় আরো রয়েছেন- ঢাবির সাবেক শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ী আবু সোলায়মান সোহেল, ব্যবসায়ী সহোদর সাখাওয়াত হোসেন, ব্যবসায়ী জাহিদুল ইসলাম, সাবেক সেনা সদস্য নোমান সিদ্দিকী, অডিটর প্রিয়নাথ রায়, নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসের নিরাপত্তা প্রহরী শাহাদাত হোসেন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মেডিকেল টেকনিশিয়ান নিয়ামুন হাসান, ঢাকার ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অফিসে কর্মরত মামুনুর রশীদ, লিটন সরকার ও সায়েম হোসেন।
বিসিএসের প্রশ্নফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগে আলোচনায় আসা পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যানের গাড়ি চালক সৈয়দ আবেদ আলী ও তার ছেলে সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়াম।
আবেদ আলীর ছেলে সিয়ামকে ছাত্রলীগের পদ থেকে অব্যাহতি
সৈয়দ আবেদ আলীর ব্যক্তিগত প্রোফাইল ঘেটে দেখা যায়, রাজনৈতিক, সামাজিক কর্মকাণ্ড, দান খয়রাত আর পরহেজগারির নানা খবর। নামাজরত অবস্থায় একাধিক ছবি দেখা যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
সৈয়দ আবেদ আলীর গ্রামের বাড়ি মাদারীপুর জেলার ডাসার এলাকায়। ঢাকায় ও গ্রামে একাধিক বাড়ি, গরুর খামার ও সম্পদের তথ্য মিলেছে তারই ব্যক্তিগত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
সবশেষ উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনের জন্য প্রচারণা চালিয়ে ছিলেন আবেদ আলী। আবেদ আলী সমাজের বিত্তবান ও প্রভাবশালীদের সঙ্গে নিয়মিত চলাফেরা করতেন। প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিদের সঙ্গেও ওঠবস করতেন।
স্বাআলো/এস