রাজনীতি ও সন্ত্রাসীদের ‘লাল কার্ড’ দেখিয়েছেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত বিভিন্ন কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। ইতোমধ্যে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে তারা প্রশাসনিক ও একাডেমিক ভবনগুলোতে তালা ঝুলিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ৬ দফা দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্বার বাংলায় শুরু হয় এ কর্মসূচি।
এ সময় তারা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার, ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকার সিদ্ধান্ত কার্যকর এবং কুয়েটের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও ছাত্র কল্যাণ পরিচালক পদে নতুন নিয়োগ দেয়ার দাবি জানান।
এ ছাড়া সন্ত্রাসীদের লাল কার্ড প্রদর্শন শেষে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের ভেতরের সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে।
এর আগে বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় অজ্ঞাত ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। কুয়েটের নিরাপত্তা পরিদর্শক মনিরুজ্জামান লিটন বাদী হয়ে খান জাহান আলী থানায় ওই মামলাটি দায়ের করেন।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) আল্টিমেটামের সময় সীমার মধ্যে ৬ দফা দাবি পূরণ না হওয়ায় কুয়েটের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও ছাত্র কল্যাণ পরিচালককে বর্জন করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। দুপুরে প্রশাসনিক ও একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন তারা।
তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, শিক্ষার্থীদের চারটি দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। বুধবার চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সিন্ডিকেট সভায় শিক্ষার্থীদের সব দাবি নিয়েই আলোচনা হয়। সভায় তাদের সব দাবি মেনে নেয়া হলেও ভিসিসহ কয়েকজনের পদত্যাগের দাবিটি নাকোচ হয়।
তিনি জানান, সভায় ক্যাম্পাসে সবধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোরতার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হলে তাকে বহিষ্কার ও চাকরিচ্যুত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) কুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে আহত হন অন্তত অর্ধশত শিক্ষার্থী। আহতদের কুয়েটের মেডিকেল সেন্টারসহ আশপাশের বেসরকারি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়।
কুয়েটে ছাত্রদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে বলে জানান খানজাহান আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন।
স্বাআলো/এস
