Uncategorized

যশোরে ভোর হতেই জেগে ওঠে ধান কাটা শ্রমিকের হাট

| May 3, 2025

নিজস্ব প্রতিবেদক

হাতে কাস্তে, মাথায় মাথাল, গায়ে লুঙ্গি-গামছা জড়িয়ে ভোরের আলো ফুটতেই ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে বসে আছেন কৃষি শ্রমিকরা। অপেক্ষা কৃষকের জন্য। দরদাম মিললেই ছুটবেন সোনালী বোরো ধান কাটতে। প্রতি বছরের মতো এবারো ধান কাটার মৌসুমে যশোরের অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া রেলস্টেশন সংলগ্ন নূরবাগ এলাকা পরিণত হয়েছে এক জমজমাট শ্রমিকের হাটে।

শনিবার (৩ মে) নূরবাগ রেলক্রসিংয়ের পাশে রেললাইনের ধারে বসে আছেন ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী অসংখ্য ধান কাটা শ্রমিক। ভোর থেকে শুরু হয়ে সকাল ৮টা পর্যন্ত চলে এই হাটে কৃষক ও শ্রমিকের আনাগোনা।

জানা গেছে, মূলত দেশের উত্তরাঞ্চল, বিশেষ করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহীসহ বিভিন্ন জেলা থেকে শত শত শ্রমিক প্রতি বছর এই মৌসুমে ধান কাটতে অভয়নগরে আসেন। কৃষকের সঙ্গে দিনপ্রতি মজুরির চুক্তি হলে তারা কাজে লেগে পড়েন। প্রায় এক মাস ধান কাটার কাজ করে আবার নিজ এলাকায় ফিরে যান তারা।

তিস্তা নদীতে পানি বৃদ্ধি, কৃষকদের মাঝে আনন্দ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আসা এক শ্রমিক জানান, তিনিসহ দলের ছয়জন সদস্য আগের দিন অভয়নগরে এসেছেন। সকাল থেকে অপেক্ষা করলেও পছন্দসই দরদাম না মেলায় এখনো কাজে যোগ দিতে পারেননি।

রাজশাহী থেকে আসা আরেক শ্রমিক বলেন, গত তিনদিন ধরে ধোপাদী গ্রামের এক কৃষকের কয়েক বিঘা জমির ধান কেটে শেষ করেছি। দলে আমরা ছয়জন। এখন নতুন কাজের জন্য হাটে এসেছি। এক কৃষকের সঙ্গে কথা চলছে। আমরা জনপ্রতি এক হাজার টাকা মজুরি চেয়েছি, তিনি সাড়ে ৮০০ টাকা বলছেন। দরদাম ঠিক হলেই চলে যাবো।

নওয়াপাড়া গ্রামের এক কৃষক বলেন, ৬ বিঘা জমির ধান পেকে গেছে। বৃষ্টি নামার আগে কাটতে হবে। কিন্তু স্থানীয়ভাবে শ্রমিক সংকট। তাই প্রতি বছরের মতো এবারো নূরবাগ হাটে এসেছি। তবে এবার শ্রমিকের মজুরি বেশ চড়া। সাড়ে ৮০০ টাকা বললেও তারা হাজার টাকার নিচে রাজি হচ্ছে না। সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত কাজ করতে হবে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে অভয়নগরের আটটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় মোট ১২ হাজার ৭৩৮ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে, যার ফলনও হয়েছে বাম্পার। ইতোমধ্যে সাত হাজার ৬৪৩ হেক্টর (প্রায় ৭০ শতাংশ) জমির ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লাভলী খাতুন বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আগামী ১০-১২ দিনের মধ্যে বাকি ধান কাটা শেষ হবে বলে আশা করছি। অভয়নগরের নূরবাগের এই শ্রমিকের হাটটি বেশ পরিচিত। সঠিক মজুরি পাওয়ার আশায় দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে শ্রমিকরা এখানে আসেন, যা ধান কাটা সহজ করে তোলে।

স্বাআলো/এস

Shadhin Alo