সরকারের আনুষ্ঠানিক নিষেধাজ্ঞার পর আওয়ামী লীগের কার্যক্রম চালানো বা দলটির নেতাকর্মীদের গ্রেফতারে আর কোনো আইনি জটিলতা নেই বলে জানিয়েছে পুলিশ। এতোদিন আনুষ্ঠানিক নিষেধাজ্ঞার অভাবে মাঠপর্যায়ে কর্মকর্তারা যে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছিলেন, এখন আর সেই সমস্যা থাকবে না বলে পুলিশ সূত্র উল্লেখ করেছে।
পুলিশ সদর দফতর সূত্র জানায়, সোমবার (১২ মে) সরকারের আনুষ্ঠানিক নিষেধাজ্ঞা জারির পরপরই মাঠপর্যায়ে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা পাঠানো হবে। এই নির্দেশনার পর থেকে দেশের কোথাও আওয়ামী লীগের কোনো মিছিল, সমাবেশ বা গোপন বৈঠক হলে পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে অভিযান চালিয়ে সংশ্লিষ্টদের গ্রেফতার করতে পারবে।
ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক জানান, নিষিদ্ধ সংগঠনের কোনো কার্যক্রম ঢাকা রেঞ্জে চলতে দেয়া হবে না। এ বিষয়ে জেলার পুলিশ সুপারদের স্পষ্ট নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এক ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা জানান, যদিও কাগজে-কলমে এখনো আদেশ জারি হয়নি, তবে কার্যত আওয়ামী লীগকে এখন নিষিদ্ধ দলের তালিকায় রাখা হয়েছে। শুধুমাত্র মাঠের কার্যক্রম নয়, সোশ্যাল মিডিয়ায় দলটির পক্ষে পোস্ট, মন্তব্য বা ভিডিও প্রকাশ করলেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিচারের আগ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ
সাইবার অপরাধ দমন শাখার একজন কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন, ফেসবুক বা ইউটিউবে আওয়ামী লীগের পক্ষে কেউ কিছু বললে বা বিদেশে বসেও প্রচার চালালে সাইবার সিকিউরিটি আইনে মামলা দায়ের করা হবে এবং দেশে ফিরলেই তাদের গ্রেফতার করা হবে।
সাবেক আইজিপি নূরুল হুদা বলেছেন, নিষিদ্ধ সংগঠনের সদস্যদের গ্রেফতার পুলিশের আর কোনো বাধা থাকছে না। আইন অনুযায়ী এখন যেকোনো গ্রেফতার বৈধ।
এদিকে, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আমিনুল ইসলাম জানান, পেনাল কোডের ১৮৮ ধারা অনুযায়ী, সরকারি আদেশ অমান্যকারীদের ছয় মাস পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।
আওয়ামী লীগের অনলাইন কার্যক্রম বন্ধেও কঠোর উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল জানান, সাইবার স্পেসেও দলটির উপস্থিতি বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব জানান, সরকারি পরিপত্র জারির সঙ্গে সঙ্গেই বিটিআরসি মেটা, গুগলসহ বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোতে চিঠি পাঠাবে। ফেসবুক, ইউটিউব ও টুইটার থেকে দলটির সব ধরনের কার্যক্রম সরিয়ে নিতে তাদের বলা হবে।
বর্তমানে ফেসবুকে ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ’ নামের যে ভেরিফায়েড পেজটি রয়েছে, যেখানে প্রায় ৪০ লাখ ফলোয়ার রয়েছেন, সেটিও নিষিদ্ধ তালিকাভুক্ত করা হবে বলে জানা গেছে।
স্বাআলো/এস