ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলা সীমান্ত দিয়ে গভীর রাতে প্রায় ৭৫০ জন ব্যক্তিকে বাংলাদেশে পুশইন করার চেষ্টা করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। তবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং স্থানীয় জনগণের সম্মিলিত প্রতিরোধের মুখে বিএসএফের সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাতভর সীমান্তে উত্তেজনা বিরাজ করলেও, পরিস্থিতি টের পেয়ে বিএসএফ সরে যাওয়ায় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
একাধিক সূত্র জানায়, বিভিন্ন সময়ে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে আটক ৬০০ জনের বেশি এবং সম্প্রতি রাজস্থানে আটক ১৪৮ জনসহ মোট ৭৫০ জনের মতো ব্যক্তিকে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সেখানকার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। আটককৃতদের মধ্যে বেশিরভাগই বাংলাদেশি এবং কিছু সংখ্যক রোহিঙ্গা রয়েছে বলে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) রাত ২টার দিকে এই ৭৫০ জন ব্যক্তিকে বিজয়নগর উপজেলার সিঙ্গারবিল ইউনিয়নের সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পুশইন করার জন্য জড়ো করে বিএসএফ। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি সীমান্তে সতর্ক অবস্থান নেয়।
বিজিবির পাশাপাশি স্থানীয় জনগণও ব্যাপক সংখ্যায় যোগ দেয় প্রতিরোধে। মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে সিঙ্গারবিল, বিষ্ণুপুর, নলঘরিয়া, মেরাসানী ও নোয়াবাদী সীমান্তের শত শত মানুষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে জড়ো হয়। অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লাইভে এসে লোকজনকে সীমান্তে জড়ো হওয়ার আহ্বান জানান, যার ফলে দ্রুত বিপুল সংখ্যক মানুষ সেখানে চলে আসে। জনগণের এই ব্যাপক উপস্থিতি এবং প্রতিরোধের মুখে বিএসএফ পিছু হটে যায়।
যুদ্ধবিরতির পর সীমান্তে সেনা কমাতে ভারত-পাকিস্তানের ঐকমত্য
ইউনিয়ন পরিষদ মেম্বার বাচ্চু মিয়া শুক্রবার সকালে জানান, এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। রাত ২টার দিকে বিজিবির মাধ্যমে খবর পেয়ে তিনি এলাকার মানুষকে সীমান্তে যেতে বলেন এবং জনগণের উপস্থিতিতে বিএসএফ সরে যায়।
আরেকজন ইউনিয়ন পরিষদ মেম্বার মামুন চৌধুরী বলেন, বিএসএফ পুশইনের চেষ্টা করলে এলাকায় মাইকিং করে লোকজনকে জড়ো করা হয়। বিজিবির সহযোগিতায় জনগণ সীমান্তে গিয়ে তাদের পিছু হটতে বাধ্য করে। তবে কতজনকে সীমান্তে আনা হয়েছিল, সেটি তিনি নিশ্চিত করে বলতে পারেননি।
বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সাধনা ত্রিপুরা বলেন, সীমান্তের পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে। পুশইন চেষ্টার খবর পেয়ে জনগণ বিজিবির সঙ্গে থেকে এটি প্রতিহত করেছে এবং সকলে এখনও সতর্ক অবস্থানে আছেন।
বিজিবি-২৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল জাব্বার আহাম্মেদ সাংবাদিকদের জানান, বিএসএফ পুশইন করবে বলে খবর আসে। এ অবস্থায় বিজিবি সীমান্তে সতর্ক অবস্থান নেয় এবং স্থানীয় জনতাও সেখানে জড়ো হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলে।
স্বাআলো/এস