টানা বর্ষণ এবং ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে লালমনিরহাটসহ রংপুর বিভাগের তিস্তা, ধরলা, সানিয়াজানসহ বিভিন্ন নদ-নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে করে নদী তীরবর্তী হাজার হাজার মানুষের মাঝে তীব্র বন্যা আতঙ্ক বিরাজ করছে।
শুক্রবার (৩০ মে) রাত থেকে তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে পানি বিপদসীমার প্রায় এক মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে যেভাবে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাতে যেকোনো সময় বিপদসীমা অতিক্রম করার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, উজানে ভারতের সিকিম ও উত্তরবঙ্গে ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ায় তিস্তার পানি হঠাৎ করে বাড়তে শুরু করেছে।
বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনীল কুমার জানান, পানি এখনো বিপদসীমার নিচে থাকলেও তারা সতর্ক অবস্থানে আছেন এবং প্রতি ঘণ্টায় পানির গতি-প্রবাহ পর্যবেক্ষণ করছেন। তিনি বলেন, আপাতত সরাসরি বন্যার আশঙ্কা নেই, তবে পরিস্থিতি দ্রুত পাল্টে যেতে পারে।
বাড়ছে নদীর পানি, ৩ দিনের মধ্যে যেসব জেলায় বন্যা হতে পারে
পানি উন্নয়ন বোর্ডের এই বক্তব্যের পরও তিস্তাপাড়ের স্থানীয়দের মাঝে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। তিস্তার পানি বাড়লে সবচেয়ে আগে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল। তিস্তাপাড়ে প্রায় ৯৫টি চর রয়েছে, যেখানে হাজার হাজার মানুষ বসবাস করে। এসব এলাকার বেশিরভাগ ঘরবাড়ি নদীর চরজমিতে নিচু হওয়ায় পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সহজেই প্লাবিত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে।
আদিতমারী উপজেলার চর গোবর্ধন এলাকার বাসিন্দা ফজলার রহমান বলেন, বন্যা এলে সবকিছু শেষ হয়ে যায়। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মাঠের ফসল, গরু-ছাগল, বাড়ির জিনিস সব ভেসে যায়। এবারও ভয়ে আছি, অনেকেই উঠোনে পলিথিন টানিয়ে মালপত্র রাখছে।
দ্রুত বাড়তে থাকা পানি পরিস্থিতি এবং উজান থেকে আসা ঢলের কারণে তিস্তা তীরবর্তী এলাকার মানুষ এখন সতর্ক অবস্থায় রয়েছে এবং যেকোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।
স্বাআলো/এস