উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল এবং কয়েক দিনের টানা বৃষ্টির কারণে তিস্তা নদীর পানি দ্রুতগতিতে বাড়ছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি এখন বিপৎসীমার খুব কাছাকাছি প্রবাহিত হচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং সম্ভাব্য বন্যা মোকাবিলায় তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে দিয়েছে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড।
শনিবার (৩১ মে) রাত ১০টায় ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি সমতল রেকর্ড করা হয়েছে ৫১ দশমিক ৮৬ মিটার। তিস্তার এই পয়েন্টে বিপৎসীমা নির্ধারিত আছে ৫২ দশমিক ১৫ মিটারে। অর্থাৎ, পানি বর্তমানে বিপৎসীমার মাত্র ৩০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে বইছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, রবিবার (১ জুন) ভোর ৬টা নাগাদ তিস্তার পানির স্তর আরো ১৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে। এতে পানি বিপৎসীমার মাত্র ১৫ সেন্টিমিটার নিচে অবস্থান করবে। তবে আশার কথা হলো, এরপর ধীরে ধীরে পানি হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তিস্তার পানি বাড়ায় ভারতে ‘রেড অ্যালার্ট’, বাংলাদেশেও সতর্কবার্তা
তিস্তার উজানে ভারতের অংশেও পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। গজলডোবা পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টায় পানি বেড়েছে রেকর্ড ১২০ সেন্টিমিটার। শুক্রবার (৩০ মে) রাত ৯টায় সেখানে পানি সমতল ছিল ১১০ দশমিক ৩০ মিটার। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, সেখানে পানি বর্তমানে কমতে শুরু করেছে। অন্যদিকে, একই সময়ে দোমহনী পয়েন্টে পানি বেড়েছে ৬১ সেন্টিমিটার। রাত ৯টায় এ পয়েন্টে পানি সমতল ছিল ৮৫ দশমিক ৬৩ মিটার, যা সেখানে বিপৎসীমার ৩২ সেন্টিমিটার নিচে ছিল।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, তিস্তা অববাহিকায় গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের অভ্যন্তরে কিংবা উজানে (বাংলাদেশ অংশে) উল্লেখযোগ্য কোনো বৃষ্টিপাত হয়নি। এর অর্থ হলো, পানি বৃদ্ধি মূলত ভারতের উজানের পাহাড়ি ঢল এবং আগের জমা হওয়া পানির কারণেই হচ্ছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক নূরুল ইসলাম জানান, গত কয়েকদিন ধরেই তিস্তার পানি বাড়ছে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে ব্যারাজের সবকটি (৪৪টি) গেট খুলে দিয়ে পানি নিয়ন্ত্রণ করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। আকস্মিক পানি বৃদ্ধি নিম্ন অববাহিকার চরাঞ্চল ও নিচু এলাকার মানুষের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
স্বাআলো/এস