ইসরায়েলে ইরানের হামলায় নিহত বেড়ে ৮, নিখোঁজ ৩৫

মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। ইসরায়েল ও ইরান একে অপরের ওপর নতুন করে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। এতে উভয় পক্ষেই হতাহতের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
ইরানের হামলায় ইসরায়েলের হাইফা ও তেল আবিবসহ বিভিন্ন শহর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্যদিকে, ইসরায়েলের হামলায় ইরানের গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি স্থাপনা ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তর লক্ষ্যবস্তু হয়েছে।
আল-জাজিরাসহ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, শনিবার রাতে ইরানের ভয়াবহ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলে অন্তত ৮ জন নিহত হয়েছেন। হামলায় ইসরায়েলের বাত ইয়াম শহরের একটি আবাসিক ভবনে ৩৫ জন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন। ভবনটি যেকোনো মুহূর্তে ধসে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে এবং উদ্ধারকর্মীরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
ইসরায়েলি পুলিশ জানিয়েছে, উত্তর ইসরায়েলে এক হামলায় চারজন নিহত হন, যাদের মধ্যে দুইজন চল্লিশোর্ধ্ব নারী, একজন ২০ বছর বয়সী নারী ও এক ১৩ বছর বয়সী কিশোরী রয়েছেন। পরে মধ্য ইসরায়েলের বাত ইয়াম শহরে আরেক হামলায় আরও তিনজন নিহত হন। হিব্রু মিডিয়ার বরাতে টাইমস অভ ইসরায়েল জানিয়েছে, বাত ইয়ামে নিখোঁজ ৩৫ জন ওই আবাসিক ভবনের বাসিন্দা।
এছাড়াও, মধ্য ইসরায়েলের বিভিন্ন অঞ্চলে আরও ২০০ জনের বেশি আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে উদ্বিগ্ন মোদি, নেতানিয়াহুকে দ্রুত শান্তি ফেরাতে তাগিদ
অন্যদিকে, ইসরায়েলও ইরানে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে। এসব হামলায় দেশটির জ্বালানি খাত ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তর সরাসরি লক্ষ্যবস্তু হয়েছে। হামলা চালানো হয়েছে ইরানের তেলের ডিপো ও গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক গ্যাসক্ষেত্রেও। তেহরানের শাহরান তেল স্থাপন ও বিশ্বের বৃহত্তম প্রাকৃতিক গ্যাসক্ষেত্র সাউথ পার্স গ্যাসক্ষেত্রে হামলা চালানো হয় এবং উভয় স্থানে আগুন ধরে যায়। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, তারা ইরান সরকারের ‘পারমাণবিক অস্ত্র প্রকল্প-সংশ্লিষ্ট স্থাপনাগুলোকেই’ লক্ষ্যবস্তু করেছে।
ইরানি গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, গত দুই দিনে ইসরায়েলি হামলায় ইরানে অন্তত ৮০ জন নিহত ও ৮০০ জন আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ২০ জন শিশু রয়েছে।
এই সংঘাত আরও ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। ইরান হরমুজ প্রণালি বন্ধ করে দেয়ার কথা বিবেচনা করছে, যা বিশ্বের তেল বাণিজ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি বন্ধ হলে তেলের দাম বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি যুদ্ধ আরও ব্যাপক আকার ধারণ করতে পারে।
এদিকে, আন্তর্জাতিক মহল থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন একমত হয়েছেন যে, ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে চলমান সংঘাতের অবসান হওয়া জরুরি।
স্বাআলো/এস