যশোরে ছিনতাইয়ের নাটক সাজিয়ে টাকা আত্মসাৎ: নগদ ম্যানেজার ও ড্রাইভারসহ আটক ৭

যশোরের মণিরামপুর উপজেলার কুয়াদা জামতলা মোড়ে চলন্ত প্রাইভেটকার থামিয়ে ছিনতাইয়ের নাটক সাজিয়ে নিজেদের হেফাজতেই কোম্পানির টাকা লুকিয়ে রাখার অভিযোগে নগদ কোম্পানির ম্যানেজার ও ড্রাইভারসহ সাতজনকে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ সময় উদ্ধার করা হয়েছে নগদ ৩২ লাখ পাঁচ হাজার ৫০০ টাকা।
চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটে সোমবার (১৭ জুন) সকালে এবং এর ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ডিবি পুলিশের অভিযানে রহস্য উদঘাটন ও জড়িতদের আটক করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সোমবার যশোর-চুকনগর হাইওয়ের কুয়াদা জামতলা মোড়ে একটি চলন্ত প্রাইভেটকার থেকে ৫৫ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রথমে দাবি করা হয়।
প্রাথমিক তথ্যে বলা হয়, দুইটি মোটরসাইকেলে আসা চারজন দুর্বৃত্ত প্রকাশ্যে রাস্তার মাঝখানে গাড়ি থামিয়ে অস্ত্রের মুখে টাকা ছিনিয়ে নিয়ে গেছে।
ঘটনার পরপরই যশোর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একাধিক দল তদন্তে নামে। ঘটনার পারিপার্শ্বিকতা বিশ্লেষণ ও গভীর তদন্তে দ্রুতই পাল্টে যায় চিত্র। গোয়েন্দাদের প্রাথমিক অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে, এটি কোনো ছিনতাইয়ের ঘটনা ছিলো না, বরং এটি ছিলো একটি পূর্বপরিকল্পিত ও সাজানো নাটক। ঘটনার মূলহোতা হিসেবে চিহ্নিত করা হয় নগদ কোম্পানির ম্যানেজার রবিউল ইসলাম এবং গাড়ির ড্রাইভার সাজুকে। তারাই এই নাটক সাজিয়ে টাকা আত্মসাতের চেষ্টা করেছিলেন।
যশোর জেলা গোয়েন্দা শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুরুল হক ভুঞা জানান, ঘটনার খবর পেয়েই ডিবির একাধিক টিম একযোগে তদন্ত শুরু করে। বিভিন্ন ক্লু ধরে এগোতে থাকলে স্পষ্ট হয়ে যায় যে, ঘটনার পেছনে ভিন্ন রহস্য রয়েছে। রাতভর যশোর ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় অভিযান চালিয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িত নগদ ম্যানেজার রবিউল ইসলাম ও ড্রাইভার সাজুসহ মোট সাতজনকে আটক করা হয়েছে। আটকের পর তাদের কাছ থেকে নগদ ৩২ লাখ ৫ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়।
ওসি আরো জানান, আটককৃতদের নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এই ঘটনার সঙ্গে আরো কেউ জড়িত আছে কিনা বা বাকি টাকা কোথায় আছে, সে বিষয়ে তথ্য জানার চেষ্টা চলছে। পুরো ঘটনার বিস্তারিত আজ (১৮ জুন) পুলিশের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তুলে ধরা হবে। এই ঘটনায় জেলায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
স্বাআলো/এস