ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাতের প্রেক্ষাপটে তেহরানে বসবাসরত যেসব বাংলাদেশি দেশে ফিরতে চান, তাদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।
প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী, আগ্রহী বাংলাদেশিদের স্থলপথে ইরান–পাকিস্তান সীমান্তে নিয়ে যাওয়া হতে পারে এবং এরপর পাকিস্তান থেকে আকাশপথে তাদের বাংলাদেশে ফেরানো হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এই মুহূর্তে ইরানে দুই হাজার বাংলাদেশি অবস্থান করছেন। তাদের মধ্যে প্রায় ৪০০ জন দেশটির রাজধানী তেহরানে বসবাস করছেন। এখনো পর্যন্ত ইরানে অবস্থানরত কোনো বাংলাদেশি হতাহত হননি। তেহরানের প্রায় ৪০০ বাংলাদেশির মধ্যে প্রায় ১০০ জন বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।
বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানান, যেসব বাংলাদেশি দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন, তাদের মধ্যে ৫০ জনের বেশি তেহরান থেকে বেশ কিছুটা দূরে নিরাপদ স্থানে সরে গেছেন। এ ছাড়া ইরানে বাংলাদেশ দূতাবাসের ৪০ জন কূটনীতিক ও কর্মকর্তাও নিরাপদ স্থানে সরে গেছেন।
যুদ্ধ শুরু, ইরান কখনো আপস করবে না: খামেনি
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব নজরুল ইসলাম বলেন, যারা দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন, তাদের মধ্যে অন্তত ৫০ জন তেহরান থেকে বেশ কিছুটা দূরে নিরাপদ স্থানে সরে গেছেন। সবার আবাসনের ব্যবস্থা একসঙ্গে করাটা এই মুহূর্তে কঠিন হওয়ায় লোকজন নিজেদের উদ্যোগে দলবদ্ধ হয়ে সরে গেছেন। দূতাবাস তাদের আর্থিক সহায়তা দেবে।
ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি চলমান সংঘাতের কারণে সে দেশে টাকা পাঠানোর জটিলতা রয়েছে জানিয়ে নজরুল ইসলাম বলেন, এই মুহূর্তে ইরানের সীমান্তবর্তী কোনো দেশ থেকে বাংলাদেশ দূতাবাসে টাকা পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। লোকজনকে নিরাপদে সরানো ও দেশে ফেরানোর জন্য বাড়তি তহবিলের বিষয়টি সুরাহার চেষ্টা চলছে বাংলাদেশের এমন একাধিক বন্ধুরাষ্ট্রের মাধ্যমে।
তেহরানে অবস্থানরত প্রায় ৪০০ বাংলাদেশির অন্তত অর্ধেক, অর্থাৎ প্রায় ২০০ জন দেশে ফিরতে আগ্রহী হতে পারেন বলে তেহরানে বাংলাদেশ দূতাবাস কর্মকর্তারা মনে করছেন। এই সংখ্যাকে ধরে নিয়ে বাংলাদেশ সরকার প্রায় ২০০ বাংলাদেশিকে দেশে ফেরানোর পরিকল্পনা করছে।
ইরান থেকে যেসব বাংলাদেশি দেশে ফিরতে চান, তাদের ফেরানোর পরিকল্পনার বিষয়ে নজরুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিকভাবে লোকজনকে তেহরান থেকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হবে। এরপর যত দ্রুত সম্ভব কয়েক দিনের মধ্যে তাদের স্থলপথে ইরান–পাকিস্তান সীমান্তে নেয়া হতে পারে। পাকিস্তান থেকে তাদের করাচি–দুবাই হয়ে ফেরত আনার পরিকল্পনা রয়েছে।
স্বাআলো/এস