ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাত নতুন ও ভয়াবহ মাত্রা পেয়েছে। ইরান দাবি করেছে, ইসরায়েল তাদের আরাক শহরের ভারি পানির পারমাণবিক চুল্লিতে হামলা চালিয়েছে। এই হামলার জবাবে ইরান ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলের শহর বেয়ের শেভা এবং তেল আবিবে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। ইরানের এই হামলায় ইসরায়েলে কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুইজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সকালে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
ইরানের আরাক পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার আগে ইসরায়েলি বাহিনী ওই চুল্লির আশপাশের এলাকার বাসিন্দাদের অবিলম্বে অন্যত্র সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল বলে খবরে উল্লেখ করা হয়েছে। অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) জানিয়েছে, আরাকের ভারি পানির চুল্লি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির গুরুত্বপূর্ণ উপাদান প্লুটোনিয়াম উৎপাদন করতে পারে। ২০১৫ সালে বিশ্ব শক্তিগুলোর সঙ্গে স্বাক্ষরিত পারমাণবিক চুক্তিতে ইরান এই চুল্লির নকশা নতুন করে করার বিষয়ে সম্মত হয়েছিলো প্লুটোনিয়াম উৎপাদন কমানোর জন্য। ইরান বরাবরই দাবি করে আসছে যে তাদের পারমাণবিক প্রকল্প সম্পূর্ণরূপে বেসামরিক উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে।
অন্যদিকে, ইরানের দাবি অনুযায়ী চালানো হামলায় ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলের শহর বেয়ের শেভার সোরোকা হাসপাতাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যদিও সরাসরি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাত লাগেনি, ইরানি রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, হামলার মূল লক্ষ্য ছিল হাসপাতালের পাশের একটি স্পর্শকাতর স্থাপনা। ইসরায়েলি জরুরি চিকিৎসা পরিষেবার একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, হাসপাতালে কোনো বিপজ্জনক পদার্থের লিক বা রাসায়নিক ঝুঁকির খবর ভিত্তিহীন। এছাড়া, তেল আবিবে অবস্থিত ইসরায়েলি স্টক এক্সচেঞ্জ ভবনেও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। এই হামলার ঘটনায় ইসরায়েলে অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন।
ইরানের হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইউরিয়েল বুসো সোরোকা হাসপাতালকে লক্ষ্যবস্তু করার ঘটনাকে রেড লাইন অতিক্রম করা এবং ইরানের
শাসকগোষ্ঠীর “যুদ্ধাপরাধ” বলে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। এই ঘটনা দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তুলবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
স্বাআলো/এস