বিএনপি ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে তাদের ভূমিকার অভিযোগ এনে সাবেক তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল, কে এম নূরুল হুদা এবং কাজী রকিব উদ্দীন আহমদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।
রবিবার (২২ জুন) শেরেবাংলা নগর থানায় মামলাটি দায়ের করেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। এ মামলায় তিন সিইসি ছাড়াও ১৯ জন এবং অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ রবিবার সকালে নিজে শেরেবাংলা নগর থানায় উপস্থিত হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। এ সময় তার সঙ্গে বিএনপির আরো তিন সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, কাজী রকিব উদ্দিন আহমদ, কে এম নূরুল হুদা ও কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশনের অধীনে অনুষ্ঠিত ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচন পরিচালনাকারী প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানিয়ে নির্বাচন কমিশনে একটি চিঠি দিয়েছিল বিএনপি।
আ. লীগ নির্বাচন করতে পারবে কিনা সিদ্ধান্ত ইসির: প্রধান উপদেষ্টা
উল্লেখ্য, গত ১৬ জুন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিতর্কিত ওই তিন জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে জড়িত সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিবদের ভূমিকা তদন্তে অবিলম্বে একটি কমিটি গঠনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।
২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন বিএনপি ও সমমনাদের বর্জনে অনুষ্ঠিত হয়। অংশগ্রহণমূলক দেখাতে শরিক ও বিরোধীদল জাতীয় পার্টির জন্য আসন ছেড়ে দেয় আওয়ামী লীগ। প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীদের সঙ্গে দলের বিদ্রোহীদের, যা ‘আমি আর ডামি’ নির্বাচন নামে পরিচিতি পায়। এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন কমিশনের অধীনে।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের একাদশ জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিলেও এতে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ ওঠে। অধিকাংশ ভোট আগের রাতে হয়ে যাওয়ার অভিযোগের মধ্যে বিরোধীরা সাতটি আসনে জয় পায়। সে নির্বাচনকে ‘নিশিরাতের নির্বাচন’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। এই নির্বাচন পরিচালনা করে কে এম নূরুল হুদা নেতৃত্বাধীন কমিশন।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির দশম নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ১৫৩টিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে যান। এই নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি এবং সে সংসদকে ‘বিনা ভোটের সংসদ’ আখ্যা দেয়। এটি অনুষ্ঠিত হয় কাজী রকিব উদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন কমিশনের অধীনে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেখানে ইতিমধ্যে আলোচিত তিন জাতীয় নির্বাচনে সিইসি, ইসি ও সচিবদের ভূমিকা তদন্তে কমিটি গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে, এর মধ্যেই বিএনপির পক্ষ থেকে এই মামলার পদক্ষেপ এলো।
স্বাআলো/এস