রাজনীতি

পরীক্ষাকেন্দ্রে কক্ষ পরিদর্শককে মারধর: ছাত্রদল নেতা বহিষ্কার

সংবাদদাতা, বগুড়া | June 27, 2025

বগুড়ার নন্দীগ্রামে এইচএসসি পরীক্ষার কেন্দ্রে নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার পর উত্তরপত্র জমা না দেওয়ায় কক্ষ পরিদর্শককে মারধর ও হত্যার হুমকি দিয়েছেন ফিরোজ আহমেদ শাকিল নামের এক ছাত্রদল নেতা। ঘটনায় তাকে পরীক্ষা ও দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার নন্দীগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজের ২০৩ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনার সঙ্গে জড়িত ফিরোজ আহমেদ শাকিল মনসুর হোসেন ডিগ্রি কলেজ শাখা ছাত্রদলের সভাপতি এবং উপজেলার মাঝগ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে। তার পরিচয়ে জানা গেছে, তিনি উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন আদরের ভাগনে।

পরীক্ষা চলাকালে এমসিকিউ অংশের নির্ধারিত সময় শেষ হলেও শাকিল উত্তরপত্র জমা দিচ্ছিলেন না। কক্ষ পরিদর্শক ফেরদৌস আলী খাতা চাইলে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে নিজেকে ছাত্রদল নেতা পরিচয় দিয়ে বলেন, “তুই বাইরে আয়, আমার বিরুদ্ধে ১২টা মামলা আছে, তোকে খুন করলে ১৩টা হবে।”

পরে শিক্ষকের হাত থেকে খাতা কেড়ে নিয়ে পরীক্ষাকক্ষ ত্যাগ করেন এবং আবার ফিরে এসে কক্ষ পরিদর্শককে মারধর করেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।

পরিদর্শক ফেরদৌস আলী জানিয়েছেন, ঘটনার পর নন্দীগ্রাম থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন তিনি। তবে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের কাছ থেকে প্রত্যাশিত সহযোগিতা পাননি বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

কেন্দ্র সচিব সহকারী অধ্যাপক আমজাদ হোসেন বলেন, “ঘটনার পরপরই শাকিলকে পরীক্ষা থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।”

নন্দীগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোসা. লায়লা আঞ্জুমান বানু বলেন, “ভুক্তভোগী শিক্ষক জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে থানায় জিডি করেছেন। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে।”

বিকালে বগুড়া জেলা ছাত্রদল এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে শাকিলকে সংগঠনের সব পদ থেকে বহিষ্কারের ঘোষণা দেয়। ছাত্রদলের জেলা সভাপতি হাবিবুর রশিদ ও সাধারণ সম্পাদক এমআর হাসান পলাশ এ সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেন। বিজ্ঞপ্তি স্বাক্ষর করেন দফতর সম্পাদক সোহান ইসলাম।

উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি জুয়েল রানা বলেন, “দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে শাকিলকে বহিষ্কার করা হয়েছে।”

ঘটনাস্থলে উপস্থিত কয়েকজন পরীক্ষার্থী জানান, শাকিল প্রভাব খাটিয়ে অতিরিক্ত সময় নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। প্রতিবাদ করলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক অভিভাবক বলেন, “উপজেলা বিএনপি নেতাদের ছত্রছায়ায় শাকিল দীর্ঘদিন ধরে চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত। পুলিশ বারবার অভিযোগ পেয়েও ব্যবস্থা নেয়নি।”

ফিরোজ আহমেদ শাকিলের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও বন্ধ পাওয়া গেছে। ফলে তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

Shadhin Alo