চৌগাছা উপজেলার পুড়াপাড়া বাজার পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার সড়কটির বেহাল দশায় চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন দুই উপজেলার অন্তত ৮০ গ্রামের মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে সড়কটির পিচ ও বিটুমিন উঠে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্তের, যা যান চলাচলের প্রায় অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে টেঙ্গুরপুর থেকে কমলাপুর মোড় পর্যন্ত কয়েকটি স্থানে গর্তগুলো হাঁটু সমান হয়ে গেছে।
চৌগাছা ও ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন শত শত মানুষ যাতায়াত করেন। খড়িঞ্চা, দেবলয়, সাঞ্চাডাঙ্গা, কমলাপুর, শ্যামনগর, চুটারহুদা, যাদবপুর, শাহাপুর, হাবাশপুর, জাগুসা, নাটিমা, মান্দারতলা, গয়েশপুর, সামান্তসহ দুই উপজেলার প্রায় ৮০ গ্রামের মানুষের জন্য এটিই প্রধান যাতায়াতের পথ।
পুড়াপাড়া বাজার এলাকাটি মিল, চাতাল, কলকারখানা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং দুটি বড় হাটের জন্য পরিচিত একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক কেন্দ্র। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা এখানে পণ্য কেনাবেচার জন্য আসেন। কিন্তু সড়কের করুণ অবস্থার কারণে তারা সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছেন না, যা ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডে স্থবিরতা সৃষ্টি করছে।
প্রতিদিন এই সড়কে ভারি যানবাহন, বাস, ট্রাক, ইজিবাইক, ভ্যানসহ বিভিন্ন ধরনের যান চলাচল করে। সড়কের দুরবস্থার কারণে প্রায় প্রতিদিনই ছোটবড় দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যাচ্ছে। পথচারী ও চালকদের জন্য সড়কটি এখন এক আতঙ্কের নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এলাকার কৃষিজীবী মানুষেরা তাদের উৎপাদিত বিভিন্ন কৃষিপণ্য (গম, ভুট্টা, মসুর, পটল, বেগুন, টমেটো ইত্যাদি) বাজারজাত করতে গিয়ে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। সড়কের বেহাল দশায় শিক্ষার্থীরাও স্কুল-কলেজে যাতায়াতে চরম ভোগান্তিতে পড়ছে।
পুড়াপাড়া বাজারের চাতাল ব্যবসায়ী নুরুণ নবী ও এসএম মিলন জানান, রাস্তার কারণে হাটের দিনগুলোতে জনদুর্ভোগ চরমে ওঠে। আন্দুলিয়া দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক রনি খাতুন, আলী হোসেন এবং রামকৃষ্ণপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ময়না খাতুন বলেন, দ্রুত সংস্কার না হলে এই সড়ক দিয়ে চলাচল প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে।
ইজিবাইক চালক শরিফুল ইসলাম, করিমন চালক হাসানুর রহমান, ট্রাকচালক আকবার আলী ও ভ্যানচালক আলামিন হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রতিদিন এ রাস্তায় চলতে গিয়ে জীবনঝুঁকি নিতে হচ্ছে। যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
শিক্ষক সোহেল আক্তার ও পথযাত্রী মাসুরা আক্তার জানান, রাস্তা মেরামত না হওয়ায় অনেক স্থানে হাঁটু সমান পানির ভেতর দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে, যা অত্যন্ত কষ্টদায়ক।
চৌগাছা উপজেলা প্রকৌশলী জনাব রিয়াসাত ইমতিয়াজ জানান, পুড়াপাড়া সড়কটি বর্তমানে খুবই খারাপ অবস্থায় রয়েছে। এবারের বাজেটে বরাদ্দ পাওয়া গেলে দ্রুত সংস্কারের কাজ শুরু করা হবে।
চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা আক্তার বলেন, পুড়াপাড়া সড়কটির বেহালদশা সম্পর্কে আমরা অবগত। দ্রুতই সড়কটি সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।
স্বাআলো/এস