যশোরের পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড ঘোপ নওয়াপাড়া এলাকার ভৈরব নদীর পাড়ের বাসিন্দারা ভয়াবহ ভাঙন এবং পানি নিষ্কাশনের প্রধান ড্রেন ভেঙে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। গত বছর নদী খননের পর থেকে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে এবং স্থানীয়রা বাঁশ দিয়ে অস্থায়ী ব্যবস্থা করে বাড়িঘর বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। এই বিষয়ে পৌরসভা ও পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিকবার আবেদন করেও কোনো সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী।
দেখা গেছে, ঘোপ নওয়াপাড়া রোডের ভৈরব নদীর পাড়ে বসবাসকারী প্রায় ৩০টি পরিবার নদী ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। গত বছর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে ঠিকাদার দিয়ে ভৈরব নদ খনন করানো হয়। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ঠিকাদাররা স্কেভেটর দিয়ে নদের সীমানার চেয়ে বেশি জায়গা খনন করায় ওই বছর থেকেই নদী ভাঙন শুরু হয়। চলতি বছর বৃষ্টিতে ভাঙন আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে। বাড়িঘর রক্ষা করতে স্থানীয়রা বাধ্য হয়ে নিজেদের উদ্যোগে বাঁশ দিয়ে পেলা ও দেয়াল নির্মাণ করছেন। তাদের আশঙ্কা, ভারী বৃষ্টি হলে বাড়ির বাকি অংশটুকুও ভেঙে নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।
ওই এলাকার বাসিন্দা এবং যশোর শিক্ষা বোর্ডের সেকশন অফিসার রাইদুল ইসলাম জানান, তার বাড়ির পাশেই পৌরসভার নির্মিত একটি বড় ড্রেন রয়েছে, যা দিয়ে পুরো ওয়ার্ডের পানি নিষ্কাশন হয়। গত বছর নদী খননের সময় পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঠিকাদারদের ব্যবহৃত স্কেভেটর ড্রেনটি ভেঙে ফেলে। ড্রেন ভেঙে যাওয়ায় তার বাড়ির পাশের মাটি সরে গিয়ে দেয়াল হেলে পড়েছে। হেলে পড়া দেয়ালটিকে রক্ষা করতে তিনি নতুন করে আরেকটি দেয়াল নির্মাণ করেছেন। তার পাশের একটি কাঁচা বাড়ির মাটি নদী ভেঙে যেতে আর মাত্র দুই হাত বাকি আছে। রাইদুল ইসলাম মনে করেন, পৌরসভা দ্রুত ড্রেনটি নির্মাণ করলে তার ও পাশের বাড়িটির মাটি ভাঙন কিছুটা রোধ করা সম্ভব হবে।
চৌগাছায় সড়কের বেহালদশা, জনদুর্ভোগ চরমে
যশোর পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মোরাদ আলী বলেন, এলাকাবাসির ড্রেন নির্মাণের আবেদন আমরা পেয়েছি। খুব শীঘ্রই সেখানে ড্রেন নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে। মজবুত ড্রেন তৈরি হলে সকলের উপকার হবে।
তিনি আরো বলেন, ভৈরব নদীর ভাঙন প্রতিরোধের বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডের এখতিয়ারভুক্ত, পৌরসভা এ বিষয়ে সরাসরি কাজ করতে পারে না।
এদিকে, পানি উন্নয়ন বোর্ডের যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জী বলেন, পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডে ভৈরব নদীর ভাঙন রোধ করার জন্য একটি প্রকল্প তৈরি করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পটি অনুমোদন হয়ে এলে নদী ভাঙন রোধের জন্য প্রয়োজনীয় কাজ শুরু করা হবে।
তবে প্রকল্পের অনুমোদন ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ হওয়ায় নদী পাড়ের আতঙ্কিত বাসিন্দারা দ্রুত ড্রেন নির্মাণ এবং জরুরি ভিত্তিতে ভাঙন রোধে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
স্বাআলো/এস