গত বছর জুলাই-আগস্ট মাসে সংগঠিত ঘটনার জেরে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক পুলিশ প্রধান (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের বিষয়ে আগামী ১০ জুলাই আদেশ দেবেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
সোমবার (৭ জুলাই) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ আদেশের জন্য এই দিন ধার্য করেন।
আদালতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন শুনানি করেন। মামলায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন ট্রাইব্যুনালে হাজির ছিলেন। প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামসহ অন্যান্য প্রসিকিউটর।
এর আগে গত ১ জুলাই এই মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। ওইদিন ট্রাইব্যুনাল শুনানির পর আদেশের জন্য ৭ জুলাই দিন নির্ধারণ করেন এবং সোমবার শুনানির পর আদেশের জন্য নতুন তারিখ ১০ জুলাই ধার্য করা হলো।
শেখ হাসিনা পরিবারের ১০৪৫ কোটি টাকা জব্দ
উল্লেখ্য, গত ১ জুন ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ৫টি অভিযোগ আমলে নেন। একইসঙ্গে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে নতুন করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। ওইদিন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামসহ প্রসিকিউটররা আদালতে অভিযোগ পড়ে শোনান, যা গণমাধ্যমে সম্প্রচার করা হয়।
গত ১৬ জুন ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে এক সপ্তাহের মধ্যে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়ে দুটি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেন। গত ১৭ জুন পত্রিকায় এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় এবং ট্রাইব্যুনাল থেকে তাদের আত্মসমর্পণের নোটিশ জারি করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ৭ দিনের মধ্যে তারা হাজির না হলে তাদের অনুপস্থিতিতেই বিচারকাজ চলবে।
মামলার অভিযোগ অনুযায়ী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর গুলি ও হত্যার নির্দেশদাতা এবং পরিকল্পনাকারী হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এই বিচার চলছে। অভিযোগ করা হয়েছে যে, ছাত্র-জনতার আন্দোলন ঠেকাতে আওয়ামী লীগ সরকার নির্বিচারে হত্যাকাণ্ড চালায়, যাতে প্রায় দেড় হাজার মানুষ প্রাণ হারায়।
গত ১২ মে এই ঘটনায় শেখ হাসিনাকে নির্দেশদাতা হিসেবে উল্লেখ করে তদন্ত সংস্থা ট্রাইব্যুনালে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। এর আগে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ট্রাইব্যুনাল ২০ এপ্রিলের মধ্যে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর দুটি মামলায় শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে দুই মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল।
স্বাআলো/এস