স্ত্রী পরিচয়ে এক নারীকে সঙ্গে নিয়ে যশোরের পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) রেস্ট হাউজে অবস্থানকালে হাতেনাতে ধরা পড়ার ঘটনায় ঝিনাইদহের মহেশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলামকে প্রত্যাহার (সংযুক্ত) করা হয়েছে।
গত রবিবার (৬ জুলাই) তাকে প্রত্যাহার করা হয়। পাশাপাশি এই ঘটনা তদন্তে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে একটি তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৩০ জুন সন্ধ্যায় যশোর পাউবোর পুরাতন রেস্ট হাউজের কপোতাক্ষ কক্ষ বরাদ্দ নিয়েছিলেন ওসি সাইফুল ইসলাম। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ওইদিন সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে তিনি এক নারীকে সঙ্গে নিয়ে রেস্ট হাউজে প্রবেশ করেন। পরবর্তীতে খবর পেয়ে জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম হাসান সনি তার দলবল নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন। রেস্ট হাউজের কক্ষের দরজায় ধাক্কাধাক্কির একপর্যায়ে ওসি সাইফুল বাইরে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করলে ছাত্রদল নেতারা তাকে টেনেহিঁচড়ে আবার ঘরের ভেতরে নিয়ে যান। ওই সময় তাদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা, ধস্তাধস্তি ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
ঘটনার ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হলে তা দ্রুত ভাইরাল হয় এবং ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। এই ঘটনার পরপরই জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ওসি সাইফুল ইসলামকে মহেশপুর থানা থেকে প্রত্যাহার করে ঝিনাইদহ পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়।
যশোরে বৈষম্যবিরোধী কমিটি দিতে আড়াই লাখ টাকা চাঁদা দাবি
রেস্ট হাউজের কেয়ারটেকার মিজানুর রহমান জানান, ওসি সাইফুল ইসলাম নিজে এসে স্ত্রী পরিচয়ে ওই নারীকে নিয়ে কক্ষ ভাড়া নিয়েছিলেন।
পাউবো যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জী জানান, ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি চিঠির ভিত্তিতে রেস্ট হাউসে কক্ষ বরাদ্দ দেয়া হয়েছিলো। অনাকাঙ্ক্ষিত এই ঘটনাটি সম্পর্কে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তদন্ত করছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি সাইফুল ইসলাম বলেন, কোনো অনৈতিক কিছু ঘটেনি। তিনি যশোরে ব্যক্তিগত কাজে এসেছিলেন এবং নারী বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে রেস্ট হাউজে অবস্থান করছিলেন। তিনি দাবি করেন, এ সময় কিছু ছাত্রনেতা এসে স্বাভাবিক কথাবার্তা বলে চলে যান এবং তার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
মহেশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ইন্সপেক্টর তদন্ত) সাজ্জাদুর রহমান জানিয়েছেন, যশোরের ঘটনার বিষয়ে তারা বিস্তারিত না জানলেও ওসি সাইফুল ইসলামকে ক্লোজড করার একটি চিঠি তারা পেয়েছেন।
ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান জাকারিয়া জানান, ঘটনার পরপরই ওসি সাইফুল ইসলামকে সংযুক্ত করা হয়েছে এবং একটি তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এই ঘটনার পর থেকে মহেশপুরসহ পুরো ঝিনাইদহ জেলাজুড়ে নানা গুঞ্জন ও আলোচনা চলছে। পুলিশ প্রশাসন জানিয়েছে, পুরো বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
স্বাআলো/এস
