খুলনা বিভাগ

ত্রয়োদশ নির্বাচন: শার্শায় বিএনপির ৪ জন, জামায়াতের একক প্রার্থী

নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক | July 12, 2025

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যশোর-১ শার্শা আসনে রাজনৈতিক উত্তাপ ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। দীর্ঘ ১৬ বছর পর ভোটাধিকার ফিরে পাওয়ার প্রত্যাশায় এই আসনের ভোটারদের মধ্যেও নতুন করে উৎসাহ ও আনন্দ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এ আসনে প্রধান বিরোধী দল বিএনপির চারজন এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর একজন একক প্রার্থী নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

মনোনয়ন প্রত্যাশীরা এলাকার প্রতিটি ইউনিয়ন, পৌরসভা ও ওয়ার্ড পর্যায়ে সভা-সমাবেশ, মিছিল ও পথসভার মাধ্যমে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেদের উপস্থিত জানান দিচ্ছেন।

শার্শা আসনের ১১টি ইউনিয়নে মোট ভোট কেন্দ্র রয়েছে ১০২টি। বর্তমানে এ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা দুই লাখ ৯৯ হাজার ২৮০ জন, যার মধ্যে পুরুষ ভোটার এক লাখ ৫০ হাজার ৪৪০ জন এবং নারী ভোটার এক লাখ ৪৮ হাজার ৮৮৩ জন।

এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন চারজন হেভিওয়েট প্রার্থী। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন দলের সাবেক কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য মফিকুল হাসান তৃপ্তি। তিনি গত ১৭ বছর ধরে নানা মামলা, হামলা ও হয়রানির শিকার হয়েছেন এবং একাধিকবার কারাবরণ করেছেন। শত প্রতিকূলতার মধ্যেও তিনি সাধারণ মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করেছেন এবং এবারো তিনি এই আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে জোরেশোরে প্রচারণা চালাচ্ছেন।

মাঠপর্যায়ে সক্রিয় রয়েছেন শার্শা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক তরুণ রাজনীতিবিদ নুরুজ্জামান লিটন। ২৫টি রাজনৈতিক মামলার আসামি হিসেবে পরিচিত ত্যাগী ও দুঃসময়ের নেতা হিসেবে তিনি নেতাকর্মীদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়। গত সরকারের আমলে তিনি নেতাকর্মীদের পাশে ছিলেন, গরিব ও অসহায় কর্মীদের জামিন করানোসহ দলের জন্য কাজ করেছেন। মাঠপর্যায়ে একজন পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ হিসেবে তার অবস্থান বেশ শক্তিশালী।

বিএনপির অপর মনোনয়ন প্রত্যাশী হলেন সাবেক শার্শা উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও বর্তমানে উপজেলা বিএনপির উপদেষ্টা আলহাজ্ব খাইরুজ্জামান মধু। ওয়ান ইলেভেনের সময় সেনাবাহিনী কর্তৃক নির্যাতনের শিকার হওয়ার পর গত ১৭ বছরে তিনি খুব কমই বাড়িতে থাকতে পেরেছেন, অধিকাংশ সময় তাকে জেলখানাতেই কাটাতে হয়েছে। এবার তিনিও এ আসন থেকে বিএনপির এমপি প্রার্থী হতে ইচ্ছুক।

এছাড়া শার্শা উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান সভাপতি আবুল হাসান জহিরও এই আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী। তিনি ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নানা হয়রানি ও হামলার শিকার হয়েছেন, আহত হয়েছেন এবং একাধিক মামলায় কারাবরণ করেছেন। তিনিও দলের মনোনয়ন পাওয়ার জন্য রাত-দিন নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের কাছে ছুটে বেড়াচ্ছেন।

অন্যদিকে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যশোর-১ শার্শা আসনে জামায়াতে ইসলামীর একক প্রার্থী থাকায় দলটির নেতা-কর্মীরা বেশ ফুরফুরে মেজাজে রয়েছেন। জামায়াতের একক প্রার্থী কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য মাওলানা আজীজুর রহমান দলের নেতা-কর্মীদের সাথে নিয়ে বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানে নিয়মিত অংশগ্রহণ করছেন। দলের নেতাকর্মীরা প্রতিদিন সকালে দলবদ্ধভাবে বিভিন্ন ওয়ার্ডে গিয়ে ফরম পূরণ করে সদস্য সংগ্রহ করছেন। নারী ভোটাররা যদি সঠিক ও সুষ্ঠুভাবে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন, তাহলে এ আসন জামায়াত পাবে বলে তারা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন।

মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থীরা মাঝে মাঝে মিছিল ও জনসমাবেশ করে নির্বাচনী মাঠ গরম রাখছেন। তবে যশোর-১ শার্শা আসনে বিএনপি ও জামায়াত ইসলামী ছাড়া অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের উল্লেখযোগ্য কাউকে নির্বাচনী কার্যক্রমে সক্রিয় দেখা যাচ্ছে না।

বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীরা জানিয়েছেন, তাদের রাজনৈতিক দলের প্রধান যেভাবে নির্দেশনা দেবেন, তারা সেভাবেই কাজ করবেন। আসছে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দল যাকে যোগ্য মনে করবে, তাকেই দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হবে এবং মনোনীত প্রার্থীর পক্ষেই সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবেন। তাদের মধ্যে কোনো দলীয় কোন্দল নেই বলেও তারা দাবি করেন।

স্বাআলো/এস

Shadhin Alo