জনগণের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, মব সন্ত্রাস ও নারী ধর্ষণ-নির্যাতন বন্ধ করা, জলাবদ্ধতা, যানজট নিরসন এবং মশা নিধনে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়াসহ বিভিন্ন দাবিতে রবিবার (১৩ জুলাই) মাগুরায় সমাবেশ করেছে গণকমিটি মাগুরা জেলা। চৌরঙ্গী মোড়ে প্রেসক্লাবের সামনে সকাল ১১টায় এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
গণকমিটির আহবায়ক এটিএম মহব্বত আলীর সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব প্রকৌশলী শম্পা বসুর পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কমিটির সদস্য কাজী জান্নাতুন নূর ও বাসারুল হায়দার বাচ্চু।
সমাবেশে বক্তারা সম্প্রতি ঘটে যাওয়া কয়েকটি নৃশংস ঘটনার তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তাঁরা বলেন, গত ১১ জুলাই রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ভাঙ্গারি ব্যবসায়ী সোহাগকে যুবদলের সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে পাথর মেরে ও কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। এছাড়া খুলনায় নিজ বাড়ির সামনে যুবদল নেতা মাহবুবকে গুলি করে এবং পায়ের রগ কেটে হত্যা এবং চাঁদপুরে ইসলামি বয়ানে মতের অমিল হওয়ায় মসজিদের ইমামকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলার ঘটনা অত্যন্ত উদ্বেগজনক ও উৎকণ্ঠার বিষয়।
মিটফোর্ডের সামনে ব্যবসায়ী খুন, ২ আসামি রিমান্ডে
নেতৃবৃন্দ দ্রুততম সময়ের মধ্যে এসব ঘটনার হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। একইসঙ্গে সারাদেশে মব-সন্ত্রাস, নারী ধর্ষণ-নির্যাতন বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি এবং দ্রুত বিচার নিশ্চিত করার আহবান জানান।
বক্তারা দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, গত ছয় মাসে ৪৮১ জন নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এবং ৩২০ জন নারীকে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, গত দশ মাসে মব সৃষ্টি করে হুজুগ তুলে প্রায় ১৭২ জন মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। তাঁরা অভিযোগ করেন, সরকার এসব ঘটনায় দ্রুত কোনো আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছে না। বরং মবকে স্বাভাবিকীকরণ করে ‘প্রেশার গ্রুপ’ হিসেবে আখ্যা দিচ্ছে, যা এ ধরনের নির্মম ঘটনাকে নানাভাবে যৌক্তিকতা দিচ্ছে এবং মবকে আরো উৎসাহিত করছে। এর ধারাবাহিকতায় এখন রাজনৈতিক কোন্দল, চাঁদার ভাগ-বাঁটোয়ারা এবং আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নানা রকম ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড ও সংঘর্ষের ঘটনা সামনে আসছে।
গণকমিটির নেতারা বলেন, চাঁদাবাজ ও দখলদারদের কারণে সৃষ্ট এসব ঘটনার দায় সরকার কোনোভাবেই এড়াতে পারে না। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। অথচ সরকার বারবার অন্যের ঘাড়ে দায় চাপিয়ে নিজের ব্যর্থতা আড়াল করছে। দেশের শাসন ও প্রশাসন এভাবে চলতে পারে না বলে তাঁরা মন্তব্য করেন।
সমাবেশ থেকে মাগুরা শহরের জলাবদ্ধতা ও যানজট নিরসন এবং মশার উপদ্রব দূর করতে পৌর কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার আহবান জানানো হয়।
স্বাআলো/এস
