খুলনা বিভাগ

যশোরে ব্যবসায়ীকে গর্তে পুঁতে ৪ কোটি টাকা চাঁদা আদায়

নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক | August 3, 2025

যশোরের অভয়নগরে এক ব্যবসায়ীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে, মারধর করে এবং বুকসমান গভীর গর্তে পুঁতে রেখে কয়েক দফায় মোট ৪ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার মতো ভয়াবহ অভিযোগ উঠেছে। এই রোমহর্ষক ঘটনার মূল অভিযুক্ত হিসেবে নাম এসেছে নওয়াপাড়া পৌর বিএনপির (পদ স্থগিত) সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান জনি এবং নওয়াপাড়া প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মফিজ উদ্দিন দপ্তরীর।

ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী শাহনেওয়াজ কবীর ওরফে টিপুর (৪৮) স্ত্রী আসমা খাতুন এই ঘটনার বিচার চেয়ে গত ৩১শে জুলাই অভয়নগরের রাজঘাট সেনা ক্যাম্পে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, ঘটনার পর থেকে তার স্বামী ও পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এবং প্রাণের ভয়ে ব্যবসায়ী টিপু এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।

ঘটনার লোমহর্ষক বিবরণ

অভিযোগে আসমা খাতুন বলেন, গত বছরের ২রা সেপ্টেম্বর সকালে সৈকত হোসেন ওরফে হিরা নামে এক ব্যক্তি তার স্বামী শাহনেওয়াজ কবীর টিপুকে কৌশলে বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামান জনির ব্যক্তিগত কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে জনি ও তার সহযোগীরা টিপুকে মারধর করে এবং অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ২ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে। উপায়ন্তর না দেখে আসমা খাতুন সাউথ বাংলা ব্যাংক থেকে জনির প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টে ২ কোটি টাকা পাঠান। টাকা পাওয়ার পর তারা টিপুকে ছেড়ে দেয়।

কিন্তু এখানেই শেষ নয়। অভিযোগে আরও বলা হয়, একই বছরের ১৮ই সেপ্টেম্বর সকালে টিপু মোটরসাইকেলে নওয়াপাড়া বাজারে যাওয়ার পথে সৈকত তার পথ রোধ করে এবং তাকে জনির মালিকানাধীন ‘কনা ইকোপার্কে’ নিয়ে আটকে রাখে। খবর পেয়ে আসমা খাতুন সেখানে গেলে জনি, সম্রাট হোসেন ও সাংবাদিক মফিজ উদ্দিন দপ্তরী তার মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন।

এরপর তারা ব্যবসায়ী টিপুকে দিয়ে একটি বুকসমান গভীর গর্ত খুঁড়িয়ে সেই গর্তে বালুচাপা দিয়ে রেখে আরও ২ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে। আসমা খাতুন বলেন, “আমার স্বামীর জীবন বাঁচাতে তিনি তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজারকে ফোন করে টাকা পাঠাতে বলেন। তখন সাংবাদিক মফিজের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পূবালী ব্যাংক থেকে ৬৮ লাখ ও সাউথ বাংলা ব্যাংক থেকে ৩২ লাখ, মোট ১ কোটি টাকা পাঠানো হয়। এছাড়া, আরও এক কোটি টাকার দুটি চেকে জোর করে আমার স্বামীর স্বাক্ষর করিয়ে নেওয়া হয়।”

সাংবাদিকদের কাছে কান্নাজড়িত কণ্ঠে আসমা খাতুন বলেন, “বিএনপি নেতা জনি ও সাংবাদিক মফিজ আমার স্বামীকে জিম্মি করে ৪ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। ভয়ে আমার স্বামী এলাকাছাড়া। আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় আছি। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধের পথে।

স্বাআলো/এস

Shadhin Alo