নোয়াখালী সদর উপজেলায় মাহফুজ (২৫) নামে এক রাজমিস্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতের পরিবারের অভিযোগ, বন্ধুর স্ত্রীর পরকীয়া প্রস্তাবে বাধা দেয়ায় তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে লাশ গাছে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।
শনিবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে উপজেলার আন্ডারচর ইউনিয়নের কাজির চর গ্রামের একটি বাড়ির পেছন থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। এর আগে, শুক্রবার দিবাগত রাতে বাড়ির রান্নাঘরের পেছনে একটি পেয়ারা গাছের সঙ্গে তাকে বাঁধা অবস্থায় দেখতে পান পরিবারের সদস্যরা। নিহত মাহফুজ ওই গ্রামের ছায়েদুল হকের ছেলে।
মাহফুজের বাবা ছায়েদুল হক অভিযোগ করে বলেন, “আমার ছেলের সঙ্গে তার প্রবাসী বন্ধু সোহাগের ভালো সম্পর্ক ছিল। কিন্তু সোহাগের স্ত্রী আছমা আমার ছেলেকে প্রায়ই কু-প্রস্তাব দিত, পরকীয়া করতে চাইতো এবং আপত্তিকর ভিডিও পাঠাতো। মাহফুজ এসবের প্রতিবাদ করায় শুক্রবার রাতে সোহাগের দুলাভাই শাহীনের নেতৃত্বে তার স্ত্রী আছমা ও ভাই সবুজসহ একটি সংঘবদ্ধ দল আমার ছেলেকে হত্যা করে। পরে তারা আমাদের বাড়ির পেছনের একটি ছোট পেয়ারা গাছের সঙ্গে লাশ বেঁধে রেখে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়ে পালিয়ে যায়।” তিনি ছেলের হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেন।
নিহতের চাচা মো. মাফুউল্যা জানান, তিন বছর আগে সোহাগ সৌদি আরব যাওয়ার সময় তার স্ত্রী ও পরিবারের দেখাশোনার জন্য বন্ধু মাহফুজকে অনুরোধ করে যান। কিন্তু সম্প্রতি সোহাগের স্ত্রী আছমা আক্তার টিকটক ভিডিও বানিয়ে মাহফুজের ইমোতে পাঠাতে শুরু করেন। বিষয়টি জানতে পেরে শুক্রবার সকালে মাহফুজের বাবা সোহাগের বাড়িতে গিয়ে তার বাবা-মাকে এ বিষয়ে জানান এবং তাদের পুত্রবধূকে এসব থেকে বিরত থাকতে বলতে বলেন।
তিনি আরো অভিযোগ করেন, “এর জেরে ওইদিন বিকেলে সোহাগের স্ত্রী আছমা, তার ভগ্নিপতি শাহীন ও ভাই সবুজ আমাদের বাড়িতে এসে মাহফুজের বাবা-মাকে গালমন্দ করে এবং মাহফুজকে হাত-পা ভেঙে হত্যার হুমকি দেয়। এসময় আছমা ভিডিও কলে তার স্বামী সোহাগের সঙ্গেও কথা বলেন এবং সোহাগও মাহফুজকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়।”
নিহতের আরেক চাচা আকবর হোসেন শিপন বলেন, “রাতে মাহফুজ বাড়ি না ফেরায় আমরা খোঁজাখুঁজি শুরু করি। এক পর্যায়ে তার মা পেয়ারা গাছের সঙ্গে তাকে বাঁধা অবস্থায় দেখতে পান। তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন ছিল।”
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে প্রবাসী সোহাগের স্ত্রী আছমা আক্তারের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।
সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম বলেন, “প্রাথমিকভাবে ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে মনে হচ্ছে। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলেই মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে এবং সেই অনুযায়ী পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্বাআলো/এস