পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, এখন থেকে পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ করার বিষয়ে নিয়মিত বাজার পরিদর্শন করা হবে এবং এ বিষয়ে আর কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেছেন, “এখন কারো কাছে আমরা পলিথিন পেলে জব্দ করে নিয়ে যাব। বাচ্চাদের নিরাপদ রাখতে আমরা এই কাজটা করব।”
রবিবার (৩১ আগস্ট) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে পরিবেশবান্ধব পাটের ব্যাগ বাজারজাতকরণ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান পলিথিন ব্যবহারের ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে সচেতন করে বলেন, পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার বন্ধ করলে আমাদের সন্তানেরা নিরাপদ থাকবে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, সরকার প্রায় সব আকারের পাটের ব্যাগে ভর্তুকি দিয়ে দাম কমিয়েছে, যাতে সেগুলো সকলের জন্য সহজলভ্য হয়। তিনি পাটের ব্যাগের স্থায়িত্বের উপর জোর দিয়ে বলেন, একটি পাটের ব্যাগ একবার কিনলে ছয় মাস থেকে এক বছর পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়।
পরিবেশ উপদেষ্টা তার বক্তব্যে মনস্তাত্ত্বিক পরিবর্তনের উপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, “আমাদের দেশ বদলাতে হলে মনস্তত্ত্ব বদলাতে হবে। আমরা সব প্লাস্টিক বন্ধের কথা বলছি না, শুধুমাত্র সেই প্লাস্টিকগুলোর কথা বলছি যেগুলো আমরা একবার ব্যবহার করে ফেলে দেই, বিশেষ করে পলিথিন শপিং ব্যাগের কথা।”
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন যে, বাংলাদেশই প্রথম রাষ্ট্র হিসেবে ২০০২ সালে পলিথিন শপিং ব্যাগ নিষিদ্ধ করেছিল। প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, “পলিথিন শপিং ব্যাগের বাস্তবতা এবং এর নেতিবাচক দিক আপনারা সবাই জানেন, তারপরেও কেন এটা ব্যবহার করবেন?”
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান পলিথিন বর্জনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আমাদের অবশ্যই পলিথিন শপিং ব্যাগ বর্জন করতে হবে। এই কারণে আমরা পাটজাত দ্রব্য তৈরি করছি এবং পাটকলগুলো কার্যাদেশ পেয়ে পুনরায় চালু হচ্ছে।” তিনি পাটের ব্যাগের বহুমুখী ব্যবহারের উদাহরণ দিয়ে বলেন, মাছ বা মাংসের মতো পণ্যও পাটের ব্যাগে নেওয়া যায় এবং ক্রেতা তা বাড়িতে নিয়ে ধুয়ে পুনরায় ব্যবহার করতে পারেন।
অনুষ্ঠানে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব আব্দুর রউফ, এবং পাট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জিনাত আরা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এই উদ্যোগ দেশের পরিবেশ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
স্বাআলো/এস