জেলা প্রতিনিধি, চুয়াডাঙ্গা: জেলার জীবননগর উপজেলা শহরের বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন কাঠপট্টিতে অগ্নিসংযোগের মূল আসামি সোনা মিয়া সহযোগীসহ আটক করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) একই উপজেলার শিয়ালমারী পশুহাট থেকে তাদের আটক করা হয়।
এদিন বেলা ২টার দিকে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে পুলিশ সুপার আরএম ফয়জুর রহমান সাংবাদিক সম্মেলনে এ বিষয়টি সম্পর্কে জানান।
আটককৃতরা হলেন, জীববনগর উপজেলার একতারপুর গ্রামের রমজান আলীর ছেলে সোনা মিয়া (২৫) ও একই উপজেলা বসতীপাড়ার খেজমত আলীর ছেলে শামীম হোসেন (২৯)। তাদের কাছ থেকে একটি হিরো ১০০ সিসি লাল রঙের মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়, যার রেজিস্ট্রেশন নম্বর চুয়াডাঙ্গা-হ-১৪-৬১৩০।
পুলিশ সুপার বলেন, জীবননগর উপজেলা শহরের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পাড়ায় ফার্নিচার ব্যবসায়ী খোরশেদ আলমের মেয়ে খুশি খাতুনের সঙ্গে উপজেলার উথলী ইউনিয়নের একতাপুর গ্রামের রমজান আলীর ছেলে সোনা মিয়া আট বছর প্রেম করার পর চার বছর আগে বিয়ে করে। খুশি খাতুন পেশায় একজন মেডিকেল
অ্যাসিস্টেন্ট। অন্যদিকে সোনা মিয়া বেকার যুবক। বিয়ের পর থেকে তাদের দাম্পত্য জীবনে কলহ ছিলো। গত ৯ মাস আগে খুশি খাতুন তার বাবার বাড়ীতে
চলে যান।
সর্বশেষ ঘটনার চারদিন আগে খুশি খাতুন সোনা মিয়াকে তালাক দেয়। কিন্তু সোনা মিয়া সে তালাক কোন ভাবেই মানতে পারছিলেন না। এতে সে বিক্ষুব্ধ হয়ে বুধবার (১৫ মে) দিনগত রাত ১টার দিকে জীবননগর উপজেলা শহরের বাসস্ট্যান্ডে অবস্থিত কাঠপট্টিতে মোটরসাইকেল যোগে যায়। সেখানে নিজের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল থেকে পেট্টোল বের করে সেখানে থাকা কাপড়ে লাগিয়ে তার শ্বশুর খোরশেদ আলমের কাঠের ফার্নিচারের দোকানে আগুন লাগিয়ে দেয়। আগুন লাগার সংবাদ পেয়ে জীবননগর, দর্শনা ও পার্শ্ববর্তী ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর ফায়ার সার্ভিস দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে তিন ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ছয়টি ছোট বড় কাঠের ফার্নিচারের দোকান পুড়ে যায়। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষতির পরিমান আনুমানিক এক কোটি টাকা।
ঘটনার ব্যাপারে জীবননগর উপজেলার আঁশতলাপাড়ার মরহুম ওসমান গনির ছেলে শহিদ (৪০) জীবননগর থানার ৪৩৬ ধারায় একটি মামলা করে। মামলা নম্বর-৮ তারিখ।
এরপর তারই পরামর্শে এবং কিছু কৌশল অবলম্বন করে জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ এসএম জাবীদ হাসান ও অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) একরামুল হোসাইন এবং এসআই দিপু মণ্ডলসহ জীবননগর থানার একদল পুলিশ ঘটনার পরপরই বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে সেগুলো দেখে ঘটনার সঙ্গে জড়িত আসামিদের আটকের জন্য বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শিয়ালমারী পশুহাট এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের আটক করা হয়।
আসামিরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। এ আগুন দেয়ার ঘটনার আগে তার শ্বশুর খোরশেদ আলমের বাড়ির রান্না ঘরে সে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিলো। আসামিদের আদালতে সোপর্দ করা হবে বলে সাংবাদিক সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান।
স্বাআলো/এস