সম্পদকীয়: সিলেটের জৈন্তাপুরে বজ্রপাতে হাফিজ কবির আহমদ নামে মসজিদের এক ইমাম মারা গেছেন। ২১ এপ্রিল ফজরের নামাজ পড়াতে মসজিদে যাওয়ার পথে মারা যান তিনি। নিহত ইমাম হাফিজ কবির আহমদ উপজেলার সোনাতুলা গ্রামের বাসিন্দা । তিনি লক্ষীপ্রসাদ পাতন টিকরগাড়া জামে মসজিদের ইমাম ছিলেন।
ঝড়-বৃষ্টির মৌসুম শুরু হয়েছে। একই সাথে শুরু হয়েছে বজ্রপাত। পরিবেশবিদরা বলছেন, ক্রমাগত জমি কর্ষণে মাটি থেকে কার্বন, নাইট্রোজেন ও ইউরিয়াজাত দ্রব্য বায়ুমন্ডলে চলে যাচ্ছে। এতে জমি স্বাভাবিক উর্বতা হারাচ্ছে। উর্বতা ফেরাতে কৃষকরা ক্ষেতে যে রাসায়নিক সার ব্যবহার করছেন তাও চলে যাচ্ছে বায়ুমন্ডলে। ফলে বায়ুমন্ডল বা আয়োনস্পিয়ার অত্যধিক ধনাত্বক চার্জযুক্ত হচ্ছে। বিপরীতে ভূমন্ডল হচ্ছে অত্যধিক ঋণাত্বক চার্জযুক্ত। ফলে চার্জের সমতা রক্ষার্থে বজ্রপাত বেশি
হচ্ছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গ্রােমর মানুষ। বজ্রপাত বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে তাপমাত্রা বৃদ্ধির একটি সম্পর্ক আছে। বিজ্ঞানীরা অনেকে মনে করেন বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য এটা বেশি হচ্ছে। বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই তাপমাত্রা বেড়েছে এবং এর কিছুটা হলেও প্রভাব পড়েছে। বজ্রপাতের ধরণই এমন।
সকালের দিকে প্রচন্ড তাপমাত্রা হয়। আর তখন এটি অনেক জলীয় বাষ্প তৈরি করে। এ জলীয় বাষ্পই বজ্র ও বজ্রপাতের প্রধান শক্তি। তাপমাত্রা যত বাড়বে তখন জলীয় বাষ্প বা এ ধরণের শক্তিও তত বাড়বে। জলীয় বাষ্প বেড়ে যাওয়া মানেই হলো ঝড়ের ঘনত্ব বেড়ে যাওয়া।
তালগাছের মতো গাছগুলো রোপণ করা উচিত খোলা মাঠে, তাহলেই এটি বেশি কাজে দেবে। কিন্তু কিছু প্রকল্পের অধীনে সেগুলো লাগানো হচ্ছে রাস্তার পাশে। এর ফলে বজ্রপাত মানুষ বা গাড়ির ওপরই পড়বে। ঘন বনও বজ্রপাত রোধের জন্য ভালো, কারণ এটি তাপমাত্রাও কমায়। গ্রামে ছোট ছোট গাছের ঝোপ থাকলে লোকজন সেখানেও আশ্রয় নিতে পারে।
বজ্রপাতের সময় আশপাশের বস্তুর তুলনায় নিজের উচ্চতা জড়সড় হয়ে কমাতে হবে কম ভিজে জায়গায় শুয়ে পড়তে হবে। আর উঁচু বস্তুর পাশে আশ্রয় নিতে হবে। সেক্ষেত্রে ধাতব বস্তু স্পর্শ করা যাবে না।
তদ্রুপ বজ্রপাত থেকে নিরাপদ থাকতে যতটুকু সম্ভব সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত এবং এজন্য মানুষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টির উদ্যোগ নিতে হবে।
স্বাআলো/এস