জাতীয়

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ নয়, স্থগিত: ড. ইউনূস

ঢাকা অফিস ঢাকা অফিস | June 12, 2025

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হয়নি, বরং দেশের এবং রাজনীতির নিরাপত্তার স্বার্থে নির্দিষ্ট কিছু সময়ের জন্য দলটির কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়েছে। বিচার প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে।

বুধবার (১১ জুন) লন্ডনে পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক থিঙ্কট্যাংক চ্যাথাম হাউসে এক আলোচনায় এ কথা জানান তিনি। চ্যাথাম হাউসের পরিচালক ব্রনওয়ে ম্যাডক্সের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এই আলাপচারিতায় প্রধান উপদেষ্টা অন্তর্বর্তী সরকারের তিন প্রধান দায়িত্ব সংস্কার, জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার এবং নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে সেগুলোর বাস্তবায়নে নেয়া পদক্ষেপগুলো তুলে ধরেন।

আলোচনার এক পর্যায়ে সঞ্চালক ব্রনওয়ে ম্যাডক্স প্রশ্ন করেন যে জুলাই সনদের সমালোচকেরা বলছেন, এর মাধ্যমে অনেক রাজনৈতিক দলকে, বিশেষ করে আওয়ামী লীগকে, বাইরে রাখা হচ্ছে এবং জনগণকে কোনো বিকল্প দেয়া হচ্ছে না। তারা এটিকে একটি কর্তৃত্ববাদী পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন।

এর জবাবে ড. ইউনূস প্রশ্ন তোলেন, আওয়ামী লীগ কি রাজনৈতিক দল? যদি তারা রাস্তায় এভাবে তরুণদের হত্যা করতে পারে, এভাবে মানুষকে গুম করতে পারে, এভাবে টাকা চুরি করতে পারে, আমরা কি তখনো এটিকে রাজনৈতিক দল বলবো? সুতরাং এটি একটি বিতর্ক। এটি কোনো সিদ্ধান্ত নয়।

নির্বাচন ইস্যুতে ইউনূসের সঙ্গে বিরোধ নয়, সমঝোতার পরামর্শ খালেদা জিয়ার

তিনি বলেন, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার প্রস্থানের পর মনে হয়েছিলো পরিস্থিতি শান্ত হবে, কিন্তু যারা পালিয়ে গেছে, তারা অন্য দেশ থেকে একইভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে, উসকানি দিচ্ছে এবং রাস্তায় সংঘর্ষ করছে। গত ১০ মাসে দলটির কেউ নিহতদের জন্য অনুশোচনা বা দুঃখ প্রকাশ করেনি।

অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান বলেন, আমরা নিরাপদ বোধ করি না; তারা রাস্তায় বিক্ষোভ করে, লোকজনকে হুমকি দেয়। তারা ইতিমধ্যে এই অভ্যুত্থানের নেতাদের হুমকি দিয়েছে। সুতরাং দেশের নিরাপত্তা, দেশের রাজনীতির নিরাপত্তার জন্য জাতি সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে নির্দিষ্ট কিছু সময়ের জন্য আওয়ামী লীগের কার্যক্রম স্থগিত থাকবে। এটুকুই আমরা করেছি। আমরা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করিনি। বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কার্যক্রম স্থগিত থাকবে।

সঞ্চালক এ সময় বিচার প্রক্রিয়া পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের জন্য না রেখে অন্তর্বর্তী সরকার কেনো করছে এমন প্রশ্ন করলে ড. ইউনূস জানান, যারা তাদের দায়িত্ব নিতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন, তারাই এই কাজটি তাদের দিয়েছেন। এই সিদ্ধান্ত তিনি নিজে নেননি।

ঐক্য ও সহমর্মিতায় সাহসী ও স্বনির্ভর জাতি গড়তে পারবো: ড. ইউনূস

নির্বাচনের সময়সূচি নিয়ে বিতর্কের প্রসঙ্গ টেনে সঞ্চালক অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে অনেকের সংশয়ের কথা বললে প্রধান উপদেষ্টা দৃঢ়ভাবে বলেন, এটা হবে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে সুন্দর নির্বাচন। সময় ঠিক আছে, জনগণও প্রস্তুত। ১৭ বছর পর আপনি একটি সত্যিকারের নির্বাচন পাচ্ছেন।

তিনি আরো বলেন, আগামী নির্বাচন কেবল একটি নতুন সরকার নির্বাচনের রুটিন ভোট হবে না, এটি হবে একটি নতুন বাংলাদেশের জন্য ভোট। তারা পুরোনো বাংলাদেশকে বিদায় বলে নতুন বাংলাদেশ তৈরি করতে চান।

বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমের ওপর দমন-পীড়নের খবর বিষয়ে সঞ্চালকের প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস এ খবরকে মিথ্যা বলে উড়িয়ে দেন। তিনি দাবি করেন, সংবাদমাধ্যম তাদের জীবনে এতো স্বাধীনতা কখনো উপভোগ করেনি এবং তারা যা খুশি বলতে পারছে।

স্বাআলো/এস

Shadhin Alo