আট বছর পর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা শুরু

দীর্ঘ আট বছর পর মেধা যাচাইয়ের জন্য আবারো ভর্তি পরীক্ষার পদ্ধতিতে ফিরেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। আজ শনিবার (৩১ মে) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের অনার্স প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা সারাদেশের ৮৭৯টি কেন্দ্রে একযোগে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত চলে এই পরীক্ষা। এবারের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য সাড়ে ৫ লাখেরও বেশি শিক্ষার্থী আবেদন করেছেন।
২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করালেও ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে এসএসসি ও এইচএসসির জিপিএর ভিত্তিতে শিক্ষার্থী ভর্তি শুরু করে। আট বছর পর ফের এই নিয়মে পরিবর্তন আনা হলো।
সরেজমিনে দেশের বিভিন্ন জেলা ঘুরে দেখা গেছে, নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষার্থীরা কেন্দ্রে প্রবেশ করেন। এসময় প্রবেশপথে তাদের কঠোর তল্লাশি করা হয়।
এর আগে শুক্রবার (৩০ মে) রাজধানীর ধানমন্ডির নগর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ এস এম আমানুল্লাহ জানান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের অনার্স প্রথম বর্ষ ভর্তি পরীক্ষা সারাদেশে একযোগে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই পরীক্ষায় ৫ লাখ ৬০ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছেন এবং পরীক্ষার জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
কালই হচ্ছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা
পরীক্ষার কেন্দ্র
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা মোট ৮৭৯টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগে সর্বোচ্চ ২৪৭টি, খুলনায় ১৫৬টি, রাজশাহীতে ১৪৩টি, চট্টগ্রামে ১৩৪টি, রংপুরে ৯৬টি, বরিশালে ৫৯টি এবং সিলেটে ৪৪টি কেন্দ্র রয়েছে। সরকারি কলেজের পাশাপাশি স্থানীয় কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকেও কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।
পরীক্ষা পদ্ধতি ও মেধাতালিকা
আট বছর পর অনুষ্ঠিত হওয়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা এমসিকিউ (বহুনির্বাচনি) পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মোট ১০০ নম্বরের প্রশ্নপত্রে সময় বরাদ্দ ছিল ১ ঘণ্টা। পাসের জন্য ৩৫ নম্বর পেতে হবে। প্রতিটি সঠিক উত্তরের জন্য ১ নম্বর রয়েছে এবং কোনো ভুল উত্তরের জন্য নম্বর কাটা হবে না।
ভর্তি পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীর এমসিকিউ অংশে প্রাপ্ত নম্বর এবং এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএর ওপর ভিত্তি করে মেধাতালিকা তৈরি করা হবে। মেধাস্কোর নির্ধারণে এসএসসি পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএর ৪০ শতাংশ (চতুর্থ বিষয়সহ) ও এইচএসসি পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএর ৬০ শতাংশ নম্বরকে এমসিকিউ পরীক্ষায় প্রাপ্ত ১০০ নম্বরের সঙ্গে যোগ করে মোট ২০০ নম্বরের ভিত্তিতে চূড়ান্ত মেধাতালিকা তৈরি হবে।
আসন সংখ্যা ও কোটা
ইউজিসির সবশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে দেশের ৮৮১টি কলেজে (২৬৪টি সরকারি ও ৬১৭টি বেসরকারি) স্নাতক (সম্মান) কোর্স রয়েছে। ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে প্রথম বর্ষে ভর্তিযোগ্য মোট আসন ছিল ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৮৫টি। ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে ডিগ্রিতে (পাস কোর্স) ৪ লাখ ২১ হাজার ৯৯০টি আসন ছিল দেশের ১ হাজার ৯৬৯টি কলেজে।
প্রতিটি বিষয়ে সর্বোচ্চ ৮টি আসন কোটার জন্য সংরক্ষিত থাকবে। এর মধ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কোটা তিনটি, আদিবাসী একটি, প্রতিবন্ধী একটি এবং পোষ্য কোটা তিনটি।
স্বাআলো/এস