জেলা প্রতিনিধি, ঝিনাইদহ: ভারতে চিকিৎসা করাতে গিয়ে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ ছিলেন ঝিনাইদহ-৪ (কালীগঞ্জ) আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য ও কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ারুল আজীম আনার।
নিখোঁজের আটদিন পর কলকাতার নিউটাউন থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে ভারতীয় পুলিশ।
গত ১২ মে দুপুর ২টা ৪০ মিনিটে দর্শনা-গেদে সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন এমপি আনার। তাকে সীমান্ত থেকে একটি ভ্যান যোগে হাস্যোজ্জ্বলভাবে যেতে দেখা যায় একটি ভিডিও ফুটেজে। পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া সীমান্ত অতিক্রম করার পর সন্ধ্যায় কলকাতার অদূরে ব্যারাকপুর কমিশনারেট এলাকার বরানগর থানার ১৭/৩ মন্ডলপাড়া লেনের সোনা ব্যবসায়ী গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে পৌঁছান। গোপাল বিশ্বাস আনারের ঘনিষ্ট বন্ধু ছিলেন। পরদিন দুপুর ১টা ৪০ নাগাদ ওই বাড়ি থেকে কিছুটা হেঁটে বিধানপার্ক কলকাতা পাবলিক স্কুলের সামনে গিয়ে একটি গাড়িতে উঠেন। ওই সময় তিনি হাস্যোজ্জ্বল ছিলেন। সেই দৃশ্য দেখেছেন গোপাল বিশ্বাসের পরিচিত শুভজিৎ মান্না।
‘তুমি বলেছিলে আমি চেষ্টা করে খুঁজে পেয়েছি’, আনার কন্যাকে প্রধানমন্ত্রী
তবে সন্ধ্যায় গোপাল বিশ্বাসের মোবাইলের হোয়়াটসঅ্যাপ নম্বরে মেসেজ আসে, তিনি (এমপি আনার) রাতে ফিরছেন না, দিল্লি যাচ্ছেন। এ সময় যাতে তাকে আর ফোন না করা হয়। তিনি দিল্লি পৌঁছে নিজেই ফোন করবেন- এমনটাও মেসেজে লেখা ছিলো।
এরপর আনারকে আর ফোনে পাওয়া যায়নি। তিনদিন পর ১৪ মে সকাল সোয়া ১১টায় তিনি শেষ মেসেজ করে জানান, দিল্লি পৌঁছে গেছেন। তার সঙ্গে ভিআইপিরা আছেন। বরানগর থানায় ১৮ মে লিখিত মিসিং ডায়েরিতে এসব তথ্য উল্লেখ করেন ভারতে তার বন্ধু গোপাল বিশ্বাস।
এমপি আনারের মরদেহ উদ্ধার হয়নি: কলকাতা পুলিশ
এমপি আনারের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ না হওয়ার কারনে সে সময় পরিবারের সদস্য ও দলীয় নেতাকর্মীরা উদ্বিগ্ন ও চিন্তিত হয়ে পড়েন। সে সময় আনারের ভাতিজা সাইমন ও একই এলাকার আশিকুর রহমান সোহাগ এমপির খবর নিতে ভারতে চলে যান। অপরদিকে পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী ও ডিবি প্রধানকে অবহিত করতে ঢাকাতে যান। এসব বিষয়টি নিশ্চিত করেছিলেন এমপি আনারের ব্যক্তিগত সহকারি আব্দুর রউফ। কিন্তু ঘটনার আটদিন পর বুধবার সকালে (২২ মে) তার মরদেহ উদ্ধার হলো ভারতের নিউটাউন থেকে।
কে এই আনার
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার নিশ্চিন্তপুর মধুগঞ্জ বাজারের মৃত ইয়াকুব বিশ্বাসের ছেলে আনোয়ারুল আজীম আনার। তিনি ১৯৬৮ মালের ৩ মে জন্মগ্রহন করেন। পরিবারে তারা চার ভাই ও ছয় বোন। আনার ছিলেন চার ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট। পেশায় ছিলেন ব্যবসায়ী।
‘এমপি আনার হত্যার ঘটনায় তিন বাংলাদেশি আটক’
ফুটবল খেলোয়াড় থেকে এমপি
চিকিৎসা নিতে গিয়ে ভারতে নিহত আনোয়ারুল আজীম আনার ছিলেন তুখোড় ফুটবল খেলোয়াড়। খেলোয়াড় হিসেবে তার যথেষ্ট সুনাম ছিলো। ভালো ফুটবল খেলার কারনে সবার কাছে তিনি জনপ্রিয় ছিলেন। সেই জনপ্রিয়তা থেকে ১৯৯৩ সালে তিনি প্রথম কালীগঞ্জ পৌরসভার কমিশনার নির্বাচিত হন। এরপর ২০০৯ সালে কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে টানা তিনবার আওয়ামী লীগ থেকে তিনি এমপি নির্বাচিত হন। এছাড়া তিনি কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পরে সভাপতি নির্বাচিত হন।
এমপি আনারের সুনাম
এ জনপ্রতিনিধি ছিলেন সবার প্রিয় ব্যক্তিত্ব। বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড, সামাজিক ও স্পর্শকাতর অনেক কাজের জন্য তিনি বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। এমপি নির্বাচিত হলেও তিনি এলাকায় কখনো প্রটোকল নিয়ে চলাফেরা করতেন না। দীর্ঘ ১০ বছর হলো তিনি এলাকার উন্নয়নে কাজ করছেন। একাই মোটরসাইকেল চড়ে আবার কখনো সাথে একজনকে নিয়ে নির্বাচিত এলাকার মানুষের সেবা করে বেড়াতেন। এ্যাম্বুলেন্সের ড্রাইভার না থাকায় নিজেই অসুস্থ রোগীর এ্যাম্বুলেন্স চালিয়ে হাসপাতালে পৌছিয়ে দিতেন। সাংসদ হিসাবে বিভিন্ন সেবামূলক কাজের জন্য তার বেশ সুনাম ছিলো। ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকার গ্রামে গ্রামে গিয়ে মানুষের সাথে দেখা করে সমস্যা শোনেন ও সমাধান করেন। তিনি চলাচলের সময় কোনো পুলিশ প্রটোকল ব্যবহার না করে একা একা চলতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতেন। সব থেকে আলোচিত বিষয় তার নির্বাচনী এলাকায় যেকোনো ব্যক্তি মারা গেলে তার বাড়িতে যান এবং শোকার্ত পরিবারকে স্বান্তনা দেন। এমনও হয়েছে তিনি একদিনে ১০ জন মৃত্যু ব্যক্তির বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সাথে দেখা করেছেন। এ পর্যন্ত তিনি পাঁচ সহাস্রাধিক মৃত ব্যক্তির দোয়া অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন। যা দেশের একজন জনপ্রতিনিধি হিসাবে বিরল।
এমপি আনারের লাশ খণ্ডবিখণ্ড, উঠে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য
সুনামের পাশাপাশি সমালোচিত
সুনামের পাশাপাশি এমপি আনারের নামে অনেক বদনামও ছিলেন। যার কারনে তিনি সমালোচিতও ছিলেন। চোরাকারবারিদের সঙ্গে আনারের সম্পৃক্ততার অভিযোগ বহু পুরোনো। চোরাকারবারে জড়িত থাকার অভিযোগে ইন্টারপোলে তার বিরুদ্ধে রেড নোটিসও ইস্যু করেছিলো। অনেকে মনে করছেন, পুরোনো কোনো ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব থাকার কারনে তাকে হত্যা করা হতে পারে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, একসময়ের দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলের সন্ত্রাসীদের নিয়ন্ত্রণ করতেন তিনি। সীমান্তের ওপার থেকে অস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্য পাচারের মূলহোতা হিসেবেও পুলিশের খাতায় নাম ছিলো তার। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে দীর্ঘদিন ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী ও সর্বহারাদের গডফাদার হিসেবে পরিচিতি পান। বাংলাদেশ সরকার ইন্টারপোলের মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। ইন্টারপোলের ওয়েবসাইটে বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে ছবি দিয়ে ওয়ান্টেড তালিকায় তার নাম ওঠে। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র, সোনা চোরাচালান, হত্যাসহ ৯টির অধিক মামলা ছিলো। ২০০৯ সালে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবার পর ইন্টারপোলের ওয়ান্টেড তালিকা থেকে নাম প্রত্যাহার হওয়ার পর এলাকায় ফিরে আগের মতোই কর্মকাণ্ড শুরু করেন তিনি।
এমপি আনারের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
ইন্টারপোলের ওয়ান্টেড আসামি হিসেবে পুলিশ ২০০৮ সালে একবার তাকে আটক করলেও তার ক্যাডার বাহিনী পুলিশের ওপর আক্রমণ করে তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটায়। ওই ঘটনায় তার বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে।
এছাড়া রাজনৈতিক সহকর্মীসহ ঝিনাইদহের রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আনোয়ারুল আজীম আনারের উত্থানের কাহিনী। ১৯৮৬ সালের দিকে জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় থাকা কালে আনার মাদক কারবারে জড়িয়ে পড়েন। ভারতের বাগদা সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশের বাঘাভাঙ্গা সীমান্ত পথে প্রতিনিয়ত মাদকদ্রব্য ও অস্ত্র আনা-নেয়ার কাজ করতেন তিনি। সেই সময় স্থানীয় থানাসহ মহেশপুর, কোটচাঁদপুর ও চুয়াডাঙ্গার জীবননগর থানা পুলিশের সঙ্গে মাসিক চুক্তিতে ‘টোকেন’ তৈরি করে তার বাহিনী। ওই টোকেন দেখালেই প্রশাসনের লোকজন মাদকদ্রব্য বহনকারী গাড়ি ছেড়ে দিতো। এই মাদক ব্যবসার মাধ্যমে বিপুল অর্থবিত্তের মালিকও বনে যান। ১৯৯১ সালের দিকে আনার ঝিনাইদহের আরেক চোরাকারবারি পরিতোষ ঠাকুরের সঙ্গে মিলে স্বর্ণ চোরাচালানের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। সোনার বড় বড় চালান রাজধানী থেকে বাঘাডাঙ্গা সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচার করতেন তারা।
কলকাতায় এমপি আনারের মরদেহ উদ্ধার, যা বললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
১৯৯৬ সালে আনার ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগে যোগ দেন। এরপর তার মাদক ও সোনা চোরাচালানের কারবার আরো বেড়ে যায়। একই সময়ে কালীগঞ্জ পৌরসভার এক কমিশনারের হাত ধরে অস্ত্র চোরাকারবারে জড়ান আনার। অবৈধ অস্ত্র চরমপন্থি ক্যাডার সামসেল ওরফে রবিনের কাছে বিক্রি করতেন তিনি। সরকারের পুরস্কার ঘোষিত শীর্ষ সন্ত্রাসী প্রকাশ ভারতে আত্মগোপন করার পর তার মাধ্যমে অস্ত্র চোরা কারবার চালিয়ে যান আনার। ভারত থেকে অস্ত্রের বড় বড় চালান দেশে আনতেন তিনি। ভারতের বাগদা এলাকার মাদক সম্রাট জয়ন্ত কুমার, কার্তিক, গৌতম সাহা ও বনগাঁর দেবদাসের সঙ্গে আনারের মাদকের কারবার ছিলো।
এমপি আনার হত্যাকাণ্ড নিয়ে দলীয় নেতাকর্মীরা যা বললেন
ভারতে চিকিৎসা করাতে গিয়ে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ ঝিনাইদহ-৪ (কালীগঞ্জ) আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য ও কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ারুল আজীম আনার কি কারনে খুন হয়েছেন তার সঠিক কোনো তথ্য দিতে পারেনি দলীয় নেতাকর্মীরা। হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে কারা জড়িত রয়েছে সে বিষয়েও স্থানীয় প্রশাসন থেকে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারের হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সাধারন সম্পাদক ও ১নং সুন্দরপুর-দুর্গাপুর ইউপি চেয়ারম্যান ওহিদুজ্জামান ওদু।
এমপি আনারের বাড়ি ও দলীয় কার্যালয়ের সামনে আত্নীয়-স্বজন ও নেতাকর্মীদের কান্নার রোল
তিনি বলেন, আমরা মানসিকভাবে কষ্ট পেয়েছি। একজন সংসদ সদস্য পাশ্ববর্তী রাষ্ট্রে যেয়ে খুন হবে এমনটি ভাবিনি। তার মৃত্যুতে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হলাম, কালীগঞ্জ আওয়ামী লীগ ক্ষতিগ্রস্থ হলো। কেনো কি কারনে খুন করা হলো আমরা এই খুনীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। যদি দলের লোক জড়িত থাকে বা আত্নীয় স্বজন বন্ধু বান্ধন জড়িত থাকে অথবা এই দেশের কোন লোক জড়িত থাকে তাদেরকে আমরা আইনের আওতায় আনতে চাই।
উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ৮০ দশকের ছাত্রলীগ নেতা মতিয়ার রহমান মতি বলেন, এমপি আনোয়ারুল আজীম আনার কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। তিনি চিকিৎসা নিতে ভারতে গিয়েছিলেন। পরবর্তীতে জানতে পারলাম তাকে মোবাইলে পাওয়া যাচ্ছে না। এরপর আমরা প্রশাসনকে বিষয়টি জানানোর পর প্রশাসন তৎপর ছিলো। কিন্তু দুঃখজনক হলেও জানতে পারলাম তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ হত্যার আমরা মোটিভ উদ্ধার চাই এবং পাশ্ববর্তী রাষ্ট্রের কাছে আমাদের অনুরোধ এই হত্যাকাণ্ডের সাথে যারাই জড়িত তাদের আইনের আওতায় এনে জাতির সামনে তুলে ধরা হোক।
নিখোঁজ এমপি আনারের লাশ কলকাতা থেকে উদ্ধার
কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রফেসর জাহাঙ্গীর আলম বলেন, তিনি গিয়েছিলেন কানের চিকিৎসার জন্য। তিনি আমাদের দলের সভাপতি ও ঝিনাইদহ-৪ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য। ঘটনা শুনে আমরা ব্যথিত ও মর্মাহত। বলার ভাষা নেই।
দলীয়ভাবে আপনারা কি ভাবছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকারের উচ্চতর পর্যায়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণাালয় এবং ভারতে বাংলাদেশের দুতাবাস আমাদের ধুয়াশার মধ্যে রেখেছে এ যাবৎ। এ বিষয়ে এখনই আমি মন্তব্য করতে পারছি না।
এদিকে এমপি আনোয়ারুল আজীম আনারের পরিবারের লোকজন ঢাকায় থাকায় তাদের পক্ষ থেকে হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
নিহত এমপি আনার ভারত যাওয়ার আগে বলেছিলেন
আমাদের সোনার জামাই কিভাবে চলে গেলো। তার টাকা পয়সা সব কিছু নিয়ে যেতো, আমাদের জামাইকে ফিরিয়ে দিতো। কেনো এভাবে নিয়ে গেলো। সে তো কাউকে ক্ষতি করেনি। তাকে কেনো মেরে ফেলা হলো। আমরা এর বিচার চাই। বুধবার এমপির বাস ভবনের নীচে এভাবেই বিলাপ করতে করতে বলছিলেন তার শাশুড়ি কালীগঞ্জ পৌরসভার সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর বিনা খাতুন।
পাশেই এমপি আনারের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সিড়িতে বসে বিলাপ করছিলেন, এমপি আনারের এক সহযোগী রুবেল হোসেন।
তিনি বলেন, ভারত যাওয়ার আগে তার সাথে শেষ কথা হয়। এসময় সে বলেছিলো চেকগুলো তুলে রাখো। গরিব মানুষের চেকগুলো তুলে রাখো। আমি ফিরে এসে চেকগুলো সব একসাথে বিতরণ করবো। সে চলে গেলো, এখন এভাবে কে গরিব মানুষের নিয়ে ভাববে। কে আর এভাবে কথা বলবে।
অপরদিকে এমপি আনারের মরদেহ কখন বাংলাদেশে আসবে সে বিষয়ে কেউ কিছু নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না।
তবে কালীঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান মতি জানান, লাশের ময়নাতদন্ত ও দুই দেশের আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশ আসতে দেরি হতে পারে।
স্বাআলো/এস