সম্পাদকীয়: ‘আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে, কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হবে’। যে ঘটনাটি ঘটেছে সে ক্ষেত্রে কবিতার চরণ দুইটি প্রযোজ্য না হলেও ঘটনার সাথে যথেষ্ট সামঞ্জস্য আছে।
এমন ঘটনাটি ঘটে গেলো যাতে সততার গড্ডালিকা প্রবাহে অন্তত মানুষের মাঝে এ আস্থা সৃষ্টি হয়েছে যে, দেশে এখনো ভালো মানুষ আছেন। সাধারণ মানুষের সেই চিন্তা ভালো মানুষ আছে বলেই আমরা এখনো টিকে আছি। ঘটনাটি হলো রাস্তায় পড়ে পাওয়া চার লাখ ৪৫ হাজার টাকা মালিককে ফিরিয়ে সততার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন ইজিবাইকচালক ইসমাইল আলী (৫৮)।
২৮ মার্চ কোতোয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক ও রামনগর ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদ হাসান লাইফের মধ্যস্থতায় টাকার মালিক ব্যবসায়ী শহিদুলকে বুঝিয়ে দেয়া হয়। যশোর শহরের মণিহার চত্ত্বরের ফল ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম তার বাসা বকচর থেকে ব্যাগে করে চার লাখ ৪৫ টাকা নিয়ে ফল পট্টিতে মোটরসাইকেলে আসছিলেন। পথে টাকার ব্যাগটি পড়ে যায়। ওই ব্যাগ পান ইজিবাইকচালক যশোর শহরতলীর রামনগরের শেখ ইসমাইল আলী।
অনুভূতি প্রকাশে শহিদুল ইসলাম বলেন, সমাজের সত্যি সত্যি এখনো সৎ এবং মানবিক মানুষ আছে। তিনি ইজিবাইকচালককে ২০ হাজার টাকা পুরস্কার হিসেবে দেন।
উল্লেখ্য এক ব্যক্তি তার এক ঘনিষ্ঠ লোকের মোবাইল ফোনে বিকাশে ১০০ টাকা ফ্লেক্সি লোড করতে গিয়ে অন্য একজনের কাছে চলে যায়। বিষয়টি বুঝতে পেরে সেই নম্বরটিতে ফোন দিলে লোকটি বেমালুম অস্বীকার করেন। বলেন তার ফোনে কোনো টাকা ঢোকেনি। এই লোকটি আর ইসমাইল আলীকে এক দাড়িতে মাপা যায়? একজন মাত্র ১০০ টাকার জন্য মিথ্যাচার করলো আর একজন কুড়িয়ে পাওয়া প্রায় চার লাখ টাকা মালিককে স্বেচ্ছায় ফিরিয়ে দিলেন। ইসমাইল আলী কুড়িয়ে পাওয়া টাকা মালিকের হাতে তুলে দিয়ে সততার অনন্য উচ্চতায় স্থান করে নিলেন। আজ যদি দেশের প্রতিটি মানুষ এমন হতো তাহলে দেশ থেকে অন্যায়-অবিচার, অনাচার-দুর্নীতি দূর হয়ে যেতো।
সরকারি- বেসরকারি সব অফিসে এক-আধশ’ ঘুষের জন্য যা চলছে, গ্রাম-গ্রামান্তরে সুদের যে অবাধ লীলা-খেলা চলমান তার সাথে যারা জড়িত তাদের ইসমাইলের কাছ থেকে শিক্ষা নেয়া উচিত। বাংলার ঘরে ঘরে ইসমাল আলীরা জন্ম নিক এ কামনা সৎ মানুষের দূর্ভিক্ষের দেশে সবার।
স্বাআলো/এসআর