তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশ থেকে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় মিডিয়া হাউজগুলোর মামলা হওয়া উচিত।
বুধবার (১ নভেম্বর) সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সমসাময়িক বিষয়ে জাতীয় পত্রিকার সম্পাদকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশ থেকে হামলায় ৩১ জনের বেশি সাংবাদিক আহত হয়েছেন। এবং দেশে যে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে সেই প্রেক্ষাপটে আপনাদের সঙ্গে এ বৈঠক।
হাছান মাহমুদ বলেন, যেসব হাউজের সাংবাদিক হামলা, নির্যাতন, নির্মমতার শিকার হয়েছেন, সেসব হাউজের উচিত মামলা করা। সেটিও করা হয়েছে কি না আমি জানি না। হয়তো দুই একটি হাউজ করেছে। বাকিরা করেনি। মামলাটা হতে হবে। আমার যদি আইনগত ব্যবস্থা নিতে হয় সংশ্লিষ্ট হাউজ মামলা করতে হবে।
সাংবাদিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের বিভিন্ন ফোরাম থেকে বিবৃতি আসা দরকার বলেও মনে করেন তথ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, মামলা হলে মানুষের মধ্যে একটা সেন্সেশন তৈরি হবে, মানুষ জানবে। এ কাজগুলো করা দরকার। তাহলে আমাদের পক্ষে ব্যবস্থা নেয়া সহজ হবে। আমরা ব্যবস্থা নিতে চাই, বদ্ধপরিকর। কিন্তু কোনো একটা বিষয় ব্যবস্থা নিতে হলে প্রথমত মামলা লাগবে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, এটা ছিলো খুবই ন্যক্কারজনক ঘটনা। এ ঘটনা দেশবাসীকে জানতে হবে। এর বিপক্ষে পাবলিক অপিনিয়ন বিল্ডআপ করতে হবে। আপনারা সবকিছুর ব্যাপারে অপিনিয়ন বিল্ডআপ করেন। কিন্তু এ বিষয়টি পুরো পরিস্থিতির ক্যানভাসে হারিয়ে গেছে। সুতরাং এটিকে আরেকটু ভাইব্রেট করে নিয়ে আসতে হবে।
আহত সাংবাদিকদের চিকিৎসা সহায়তার বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, কোনো হাউজ যদি চায় অবশ্যই আমরা তালিকা পেলে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকের চিকিৎসা সহায়তা করতে পারি। কারণ, আমাদের ট্রাস্ট ফান্ড আছে। ট্রাস্ট থেকে আমরা চিকিৎসার জন্য সহায়তা করতে পারি।
২৮ তারিখ রাষ্ট্রের ওপর হামলা হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হামলা, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের ওপর হামলা, আমার জানামতে আর কখনোই এমন ঘটনা ঘটেনি।
হামলাকারী চিহ্নিত উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, তারা বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মী। এটিকে যদি নিছক রাজনীতি বলে সেভাবে ট্রিট করি, তাহলে এটা ভুল হবে, ঐতিহাসিকভাবে ভুল হবে এবং এটির দায় আমরা এড়াতে পারবো না, আমরা সার্বিকভাবে দায় এড়াতে পারবো না।
সম্পাদকদের উদ্দেশে তথ্যমন্ত্রী বলেন, যারা কথায় কথায় বিবৃতি দেয়, তারা এখন নিশ্চুপ কেন? সে জন্য আপনাদের বিবৃতি দিয়ে মনে করিয়ে দিতে হবে: হোয়াই ইউ আর সাইলেন্ট? ইউ রাইট লেটার টু দেম।
মন্ত্রী আরো বলেন, আমি মনে করি রাজনীতিতে প্রতিযোগিতা থাকবে, তবে অবশ্যই প্রতিহিংসা থাকা উচিত নয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ডেইলি অবজারভার সম্পাদক ও বাংলাদেশ সম্পাদক ফোরামের প্রধান উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, ডেইলি পিপলস লাইফের সম্পাদক আজিজুল ইসলাম ভূঁইয়া, ভোরের কাগজ সম্পাদক ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সেক্রেটারি শ্যামল দত্ত, ভোরের ডাক সম্পাদক বেলায়েত হোসেন, আমাদের নতুন সময় সম্পাদক নাসিমা খান মন্টি, কালের কণ্ঠ সম্পাদক শাহেদ মুহাম্মদ আলী, দেশ রূপান্তরের ভারপ্রাপ্ত মোস্তফা মামুন, ডেইলি সানের প্রধান সম্পাদক এনামুল হক চৌধুরী, আমাদের নতুন সময়ের ইমিরেটাস সম্পাদক নাইমুল ইসলাম খান প্রমুখ।
স্বাআলো/এসএ