ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের সদস্যরা সীমান্তে মৌমাছি প্রতিপালন এবং মধু সংগ্রহ করে একটি অগ্রণী প্রকল্প শুরু করেছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্তে বিভিন্ন ধরনের পাচার ও অনুপ্রবেশ রুখতে মৌমাছি প্রতিপালন কাজে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। মৌমাছি পালন ও মিশন মধুকে পশ্চিমবঙ্গসহ সারা ভারতে প্রচার করা হবে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নির্দেশিত ‘ভাইব্রেন্ট ভিলেজ প্রোগ্ৰামে’র মাধ্যমে সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে এই প্রকল্পটি চালু করা হয়েছে।
বিএসএফের সূত্রের খবর, রবিবার (৫ নভেম্বর) প্রাথমিকভাবে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কৃষ্ণগঞ্জ থানার ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্ত এলাকায় মৌমাছির ২০টি বাক্স স্থাপন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী।
এই মৌমাছি প্রতিপালনের বিষয়টি দেখাশুনা করবেন সীমান্তবর্তী এলাকার গ্রামবাসীরা। এর পাশাপাশি তারা মধু সংগ্রহ করবেন। এর ফলে সীমান্তে বসবাসকারী গ্রামবাসীরা আর্থিকভাবে লাভবানও হবেন।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর এ ধরনের উদ্যোগের ফলে সীমান্তের বেড়া দিয়ে অনুপ্রবেশ ও বিভিন্ন ধরনের চোরাচালানকারীদের প্রতিরোধের সহায়তা হতে পারে বলে আশা বিএসএফের।
মাটি থেকে সামান্য ওপরে মৌমাছির বাক্স গুলো রেখে তার কাছাকাছি মৌমাছি বান্ধব ফুলের গাছ স্থাপন করা হয়েছে। বাক্সগুলোকে প্রাকৃতিক ছায়া দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতে মৌমাছির আকর্ষণের একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়। এর ফলে ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্তের বেড়া দিয়ে অনুপ্রবেশ এবং চোরাচালানকারীদের প্রতিরোধে সহায়তা হতে পারে।
এছাড়াও ভারত-বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক সীমান্তে নিরাপত্তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন ও অনুপ্রবেশ এবং চোরাচালান রোধেও মৌমাছিরা কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পারে। এটা প্রমাণ করতে ধারাবাহিকভাবে মৌমাছির বাক্স স্থাপনের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে বিএসএফ।
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের দুই পাশ ঘন বনের জন্য পরিচিত। গ্রামবাসীদের সরিষার চাষ ও বিভিন্ন ধরনের সবজির চাষের জন্য মৌমাছি সরবারহে আরো সহায়তা করবে।
এই প্রকল্পের সাফল্য নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সীমান্ত অঞ্চলের গ্রামবাসীদের মধু সংগ্রহ এবং মৌমাছি পালন জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। গ্রামবাসীরা এই উদ্যোগের জন্য ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর প্রশংসা করেছেন।
এ বিষয়ে দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তের বিএসএফের ডিআইজি একে আর্য বলেন, ঐতিহ্যবাহী কৃষিকাজ পদ্ধতির তুলনায় পর্যাপ্ত সুবিধাগুলো তুলে ধরে মৌমাছি পালন এবং মধু মিশনের সুবিধার ব্যাপক পর্যবেক্ষণ সরবরাহ করছেন।
তিনি আরো বলেন, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী সীমান্ত সুরক্ষার সঙ্গে গ্রামীণ উন্নয়নের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই উদ্যোগই তার একটি উদাহরণ। সীমান্ত অঞ্চলগুলোকে প্রাণবন্ত এবং আংশিক দুর্বল লোকজনকে এই উদ্যোগের ফলে পরিণত করতে পারে।
স্বাআলো/এসএ