ঢাকা অফিস: ইউরোপে মানবপাচার বেড়েই চলছে। অবৈধ পথে ইউরোপ পাড়ি দিতে গিয়ে মারা যায় ১২ শতাংশ। গত পাঁচ বছরে শুধু মাদারীপুরেই মানবপাচারের মামলা হয় ২৪৭টি। যার আসামি এক হাজার ২৫২ জন। যদিও আটক মাত্র ১৬৪ জন। তবে সাজা হয়নি একজনেরও। ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপ পৌঁছানোর তালিকায় শীর্ষে বাংলাদেশ। চলতি ক্যালেন্ডারের প্রথম চার মাসে এই ঝুঁকিপূর্ণ পথে যত মানুষ ইউরোপ ঢুকেছে তার ২১ শতাংশই বাংলাদেশি।
জাতিসংঘের পরিসংখ্যানে, ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপ পৌঁছানোর তালিকার শীর্ষে বাংলাদেশ। এর পরিমাণ ২১ শতাংশ। এর মধ্যে ১২ ভাগ বাংলাদেশিই মারা যাচ্ছেন।
স্থানীয়রা জানান, ঝুঁকি নিয়ে এমন পথে বিদেশ না যাওয়াই ভালো। অনেক লোক অবৈধভাবে বিদেশ যাওয়ার পথে মারা গেছে তারা তো ফিরবেন না। কিন্তু এমন পথে যেনো আর কেউ বিদেশ না যায়।
এরপরও বিশ্বের অন্যতম প্রাণঘাতী এই পথে কেন যাচ্ছে বাংলাদেশিরা? নৌকা থেকে বেঁচে ফেরা বাঁধন মন্ডল নামে এক ব্যক্তির কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিদেশ যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেয়ার পর আমাকে বলা হয়েছিল যে ১ বছরের মধ্যে ভিসা হয়ে যাবে। এর জন্য এক লাখ টাকা দেয়া হয়েছিলো। কিন্তু আমাকে পরে জানানো হয় যে ভিসা হবে না। ৩০ হাজার টাকা নিয়ে যাও আর বাকি টাকা ফেরত দেয়া হবে না। পরে আমরা এই পথে লিবিয়ার পথ বেছে নিতে হয়েছে।
বাংলাদেশের অবৈধ অভিবাসন এলাকাগুলোর মধ্যে অন্যতম মাদারীপুর। হিসেব বলছে, গত এক দশকে ভূমধ্য সাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি যাওয়ার পথে মৃত্যু হয়েছে অসংখ্য বাংলাদেশির, যাদের অনেকের বাড়ি এই রাজইর উপজেলায়।
প্রলোভনের ফাঁদে এমন মৃত্যু এবারই প্রথম নয়, তবে এটিই শেষ তাও কী বলা যাবে? কারণ গত পাঁচ বছরে মাদারীপুরে মানবপাচারের ২৪৭টি মামলায় এক হাজার ২৫২ জন আসামি হলেও আটক মাত্র ১৬৪ জন। সাজা হয়নি একটিতেও।
মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, মানব পাচারের সঙ্গে যদি কেউ জড়িত হয় অথবা অন্য কোনো অপরাধের সাথে যদি জড়িত হয় তাহলে আমরা তাদের ছাড় দেই না। তবে একটি ঘটনায় অনেকেই ১০-১৫ জনের নামে মামলা দেয়। কিন্তু এসব মামলায় সবাই কিন্তু সম্পৃক্ত থাকে না।
স্বাআলো/এস/বি