আজাদুল হক,বাগেরহাট: জেলার চিতলমারী উপজেলা পল্লীতে ছেলে সন্তান জন্ম দিতে না পারা এবং স্বামীকে দ্বিতীয় বিবাহে বাধা দেয়া সোমা রানী মন্ডল (৩৫) নামের একজন নারীকে শারিরিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে উপজেলার চরবানিয়ারী পশ্চিমপাড়া গ্রামে এ নির্যাতন ও মারপিটে আহত সোমা রানী মন্ডল কে চিতলমারী হাসপাতালে ভর্ত্তি করা হয়। সোমা মন্ডল ওই গ্রামের পঞ্চানন মন্ডলের ছেলে লব মন্ডলের স্ত্রী।
চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার খবর পেয়ে শনিবার (১ জুন) চিতলমারী হাসপাতালে চিকিৎসাধিন সোমা মন্ডলের কাছে গেলে তিনি বলেন, ১৭ বছর আগে আমাদের বিয়ে হয়েছে।
আমাদের লিখি মন্ডল (১৪), মিতু মন্ডল (৮) ও লিনা মন্ডল (৩) নামের তিনটি মেয়ে রয়েছে। পরপর মেয়ে হওয়ার কারণে শ্বশুর পঞ্চানন মন্ডল, শ্বাশুড়ী কনকলতা মন্ডল ও ভাসুর পলাশ মন্ডল আমাদের সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করেন। একই সাথে পুত্র সন্তানের জন্য স্বামী লব মন্ডল কে অন্যত্র বিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন। এতে আমি বাধা দেয়ায় আমার উপর অত্যাচার করা হয়েছে।
স্বামী বাড়িতে না থাকলে আমাকে উদ্দেশ্যমুলক মারধর করতো। এরই জের ধরে শুক্রবার বিকেল পাঁচটায় ভাসুর পলাশ মন্ডল ও তার ছেলে স্বাধীন মন্ডল আমাকে বেধড়ক মারপিট করেছে। গৃহবধূর স্বামী লব মন্ডল বলেন, পরপর তিনটি মেয়ে সন্তান হওয়ায় আমার পিতা-মাত ও বড়ভাই ক্ষুব্ধ হয়ে আমাকে দ্বিতীয় বিবাহের জন্য পরামর্শ দেয়। এতে রাজি না হওয়া পিতা ও বড়ভাই আমাকে সম্পত্তি থেকে বিতাড়িত করে। আমি অতি কষ্টে ছোট্ট একটি মুদি দোকান করে চার সদস্যর পরিবার চালাই।
অতি কষ্টে তিন মেয়েকে লেখা পড়া করাচ্ছি। তারপরও ওরা সুযোগ পেলেই আমার স্ত্রীকে নির্মম নির্যাতন করে। আমি অভিযোগ করেও এর বিচার পাই না। প্রতিবেশী প্রসেন মজুমদার ও মিলন বাড়ৈ জানান, পুত্র সন্তান না হওয়ার কারণে গৃহবধূ সোমাকে তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন প্রায়ই মারপিট ও নির্যাতন করে। তারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন যায়গায় অভিযোগ করে কোন প্রতিকার পায় নি।
সোমা মন্ডলের ভাসুর পলাশ মন্ডল নির্মম নির্যাতনের কথা অস্বীকার করে বলেন, ছোট ভাই লবের বউ বাবাকে মারপিট করায় বাড়ীর মহিলারা মিলে সোমাকে কয়েকটা চড়-থাপ্পড় মেরেছে।’ এ বিষয়ে চিতলমারী থানার ওসি ইকরাম হোসেন বলেন, ঘটনাটি স্থানীয় সাংবাদিকদের মাধ্যমে আমি শুনেছি। ওই গৃহবধুর পক্ষ থেকে আমরা কোন অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সাথে দেখবো এবং আইনানুগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
স্বাআলো/এস/বি