হাসানুজ্জামান হাসান,লালমনিরহাট: চলতি মৌসুমে লালমনিরহাটের পাটগ্রামের তিস্তার চরাঞ্চলের ব্যাপক গমের চাষ হয়েছে। কম খরচে অধিক লাভ হওয়ায় গম চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের।
উপজেলা কৃষি অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, গত বছর ৩৮ হেক্টর জমিতে গম চাষ হয়েছিলো। গমের উৎপাদন হয়েছিল প্রায় ১৬০ টন। এ বছর ৫২ হেক্টর জমিতে গমের চাষ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৩৪ টন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, তিস্তা নদীতে জেগে ওঠা চরে পলি পড়া জমিতে গম চাষ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে গম পাকতে শুরু করছে। এ অঞ্চলে একসময় গম চাষ হারিয়ে যেতে বসেছিলো। এক দশক আগেও উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে গমের চাষ হতো। কিন্তু বর্তমানে ভুট্টা চাষের দিকে বেশি ঝুঁকেছেন কৃষকরা। যার ফলে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে গম চাষ।
দহগ্রাম মহিমপাড়া এলাকার গমচাষি শাহান আবেদ আলী বলেন, ‘গত বছর গমের ভালো ফলন ও দাম পাওয়ায় এ বছর বেশি জমিতে গম চাষ করেছি। এ ছাড়া খরচ কম, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার গমের বাম্পার ফলন হয়েছে। এ মৌসুমে ভালো দাম পাব আশা করছি। সঠিক সময়ে প্রণোদনা হিসেবে উন্নত জাতের গম বীজ ও সার দেয়ায় আমরা গম চাষ করেছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবদুল গাফফার খবরের কাগজকে বলেন, এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি পরিমাণ জমিতে গম চাষ হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়া ও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করায় গমের বাম্পার ফলন হয়েছে। সঠিক সময়ে কৃষকদের মাঝে কৃষি প্রণোদনা হিসেবে উন্নত জাতের গমের বীজ ও সার সরবরাহ করা হয়েছে।
দহগ্রাম জয় বাংলা চত্ত্বর এলাকার গম চাষী আহাদুল হোসেন বলেন, বন্যায় দহগ্ৰামে গত বছরের তুলনায় এবার তিস্তার চরাঞ্চলে ব্যাপক পলি পড়েছে। পলি পড়ার কারণে গম চাষের জন্য উপযোগী হয়ে উঠেছে তিস্তার চরাঞ্চল। গত বছর চরের জমিতে আমরা তামাক এবং ধান চাষ করেছি। কিন্তু গম চাষে খরচ কম হওয়ায় এবার গম চাষ করেছি।
উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা এরশাদ হোসেন বলেন, দহগ্ৰাম তিস্তার চরাঞ্চল একসময় চাষাবাদের অনুপযোগী ছিলো। এবার দহগ্রামের কৃষকদের পরীক্ষামূলক গমের প্রদর্শনী দিয়েছি। গাছে গাছে গম পরিপক্ব হয়ে উঠছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ফসল কাটা যাবে।
দহগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, দহগ্ৰাম তিস্তার চরাঞ্চল এলাকায় ব্যাপক গম উৎপাদন হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবার গমের দাম বেশি। কৃষকরা গম চাষ করলে লাভবান হবেন। উপজেলা কৃষি অধিদফতর ও ইউনিয়ন পর্যায় থেকে কৃষকদের সহযোগিতা করা হচ্ছে।
স্বাআলো/এস