নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠনের খুলনা অঞ্চলের প্রধান গ্রেফতার

নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন হিজবুত তাহরীর খুলনা অঞ্চলের প্রধানসহ চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রবিবার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) হেডকোয়ার্টারে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন পুলিশ কমিশনার মোজাম্মেল হক।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, হিজবুত তাহরীর খুলনা অঞ্চলের প্রধান আনিসুর রহমান রুহুল আমিন রকি (৩৬), সদস্য শাকিল আহম্মেদ (২৬), রিজভী আজিম খান (২৭) ও মেহেদী হোসেন সালিত (২৪)।

পুলিশ কমিশনার মোজাম্মেল হক বলেন, খুলনা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি চৌকস টিম শনিবার দিবাগত রাতে নগরীর হরিণটানা থানাধীন খানজাহান নগর এলাকা থেকে হিজবুত তাহরীর খুলনা অঞ্চলের প্রধানসহ চারজন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ সময় তাদের কাছ থেকে চারটি ল্যাপটপ, ৬টি মোবাইল, ২টি পেনড্রাইভ, একটি এটিএম কার্ড এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ‘হিযবুত তাহরীর সংশ্লিষ্ট বইয়ের ১০টি প্রিন্ট কপি পাওয়া গেছে।

তিনি আরো বলেন, তারা দীর্ঘদিন ধরে খুলনা অঞ্চলে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন হিজবুত তাহরীরের নীতি আদর্শ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছিলো। মূলত তারা প্রচলিত রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা ও সংবিধান মানে না। এ লক্ষ্যে তারা সমাজের বিভিন্ন পেশাজীবী পর্যায়ে বিশেষত স্কুলকলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও সমাজের মেধাবী মানুষদের উগ্রবাদী আদর্শে প্রভাবিত করে জঙ্গী কার্যক্রমের মাধ্যমে প্রচলিত রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে ভেঙ্গে দিয়ে শতভাগ ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা কায়েম করতে চায়।

এদের মধ্যে আনিসুর রহমান রুহুল আমিন রকি মূলত খুলনা অঞ্চলে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন হিজবুত তাহরীরের কার্যক্রম প্রচার প্রসারের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। তার নিজ বাড়ি কুষ্টিয়া জেলায়। তিনি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে উচ্চমাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। এরপর ঢাকার ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ফার্মেসি বিভাগ থেকে অর্নাস সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি জঙ্গী কার্যক্রমে জড়িয়ে যান। এরআগে ২০১১ ও ২০১৩ সালে ডিএমপির গুলশান থানা এবং ২০১৫ সালে ডিএমপির ভাটারা থানায় গ্রেফতার হয়ে ৩, ৭ ও ১৩ মাস কারাভোগ করেছেন। তিনি তার সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছ থেকে নির্দেশনা নিয়ে জুম মিটিং ও গোপন বৈঠকের মাধ্যমে কর্মী সংগ্রহ এবং রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছিলেন।

কেএমপি কমিশনার বলেন, সংগঠনের খুলনা অঞ্চলের প্রধান আনিসুর রহমান রুহুল আমিন রকির সঙ্গে ৬/৭ মাস আগে শাকিল আহম্মেদ, রিজভী আজিম খান ও মেহেদী হোসেন সালিতের পরিচয় হয়। এরপর থেকেই তার নির্দেশনায় তারা জুমসহ বিভিন্ন অ্যাপস ও প্রটেকটিভ টেক্সটের মাধ্যমে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন হিজবুত তাহরীর জন্য সদস্য সংগ্রহ ও জঙ্গীবাদের দীক্ষা প্রদান চালিয়ে যাচ্ছিল। পর্যাপ্ত তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততা খুঁজে পাওয়ায় তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। আটকের পর জব্দ করা ইলেকট্রনিক ডিভাইস বিশ্লেষণ ও আটক ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন হিজবুত তাহরীর সঙ্গে জড়িত আরো অনেকের নাম পাওয়া গেছে। তদন্তের স্বার্থে আপাতত তাদের নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না। তাদের বিরুদ্ধে হরিণটানা থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, কেএমপি অস্ত্রধারী, সন্ত্রাসী, নাশকতাকারী, জঙ্গী, জুয়া, মাদক ব্যবসায়ী ও ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে সদা সোচ্চার রয়েছে। অপরাধমুক্ত সমাজ গঠনে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ বদ্ধপরিকর।

স্বাআলো/এসএ

Share post:

Subscribe

spot_imgspot_img

Popular

More like this
Related

বিএসপির সাহিত্য সভা অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিদ্রোহী সাহিত্য পরিষদ (বিএসপি) যশোর এর ২৪৫...

ফের পরীর সঙ্গে সম্পর্কের গুঞ্জন রাজের

ঢাকাই সিনেমার আলোচিত চিত্রনায়িকা পরীমণি ও নায়ক শরিফুল রাজের...

বেনাপোল কাস্টমসের অভিযানে অবৈধ পণ্যর ট্রাক আটক

মিলন হোসেন, বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি: বেনাপোল বন্দরের ৩৫ নম্বর...

কুয়াশায় নিরাপদে গাড়ি চালাতে ৪ নির্দেশনা

ঘন কুয়াশার কারণে বাড়ছে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি। এ অবস্থায়...