ঢাকা অফিস
রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় কারাগারে থাকা ইসকনের বহিষ্কৃত সংগঠক চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
সোমবার (৫ মে) চট্টগ্রামের ৬ষ্ঠ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এসএম আলাউদ্দিন শুনানি শেষে পুলিশের এই আবেদন মঞ্জুর করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী।
এপিপি রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী জানান, আইনজীবী আলিফ হত্যা মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার দেখানোর জন্য পুলিশ আদালতে আবেদন করেছিল। আদালত শুনানি শেষে সেই আবেদন মঞ্জুর করেছেন। নিরাপত্তা ও সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে আজ আদালতে সশরীরে হাজির করা হয়নি, তবে তিনি জেলখানা থেকে ভার্চুয়াল শুনানিতে যুক্ত ছিলেন।
জানা গেছে, গত বছরের নভেম্বরে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতার এবং আদালত প্রাঙ্গণে সৃষ্ট সহিংসতাকে কেন্দ্র করে কোতোয়ালি থানায় মোট চারটি মামলা দায়ের করা হয়। এর মধ্যে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে একটি এবং পুলিশের কাজে বাধাদান, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগে আরও তিনটি মামলা রয়েছে। সোমবার আইনজীবী আলিফ হত্যা মামলার শুনানি ভার্চুয়াল আদালতে অনুষ্ঠিত হয়। বাকি তিনটি মামলার শুনানি মঙ্গলবার (৬ মে) একইভাবে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় দায়ের হওয়া একটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গত বছরের ২৫ নভেম্বর রাতে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। চিন্ময় ‘সনাতনী জাগরণ জোট’ নামে একটি সংগঠনের মুখপাত্র হিসেবেও পরিচিত।
পরদিন, ২৬ নভেম্বর, চিন্ময়কে চট্টগ্রাম আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এই নির্দেশকে কেন্দ্র করে চিন্ময়ের অনুসারীরা চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে ব্যাপক বিক্ষোভ ও হট্টগোল শুরু করে। তারা প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে চিন্ময়কে বহনকারী প্রিজন ভ্যান আদালত এলাকায় আটকে রাখে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা লাঠিপেটা ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
এই সংঘর্ষ চলাকালীন সময়েই আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে আদালত চত্বরের কাছে নৃশংসভাবে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহত আইনজীবী আলিফের বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। সেই মামলাতেই এবার চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার দেখানো হলো।
স্বাআলো/এস
