ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে দেশজুড়ে বৃষ্টি হচ্ছে, থেকে থেকে বইছে ঠান্ডা হাওয়া। লঘুচাপটি দুর্বল হয়ে ভারতের উত্তর অন্ধ্র প্রদেশের আশে-পাশের এলাকায় অবস্থান করছে।
বিশেষজ্ঞদের মত, আগামীকাল শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) সকাল থেকে বা একটু বেলা বাড়লেই বৃষ্টি বন্ধ হয়ে আবহাওয়া পরিস্থিতির উন্নতি হবে। বর্তমানে এটি গুরুত্বহীন মনে করছে আবহাওয়া অফিস।
তবে আকাশ মেঘলা থাকবে। টানা বৃষ্টির কারণে কমবে দিন ও রাতের তাপমাত্রা। বৃহস্পতিবার অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, আগামীকাল সকালের মধ্যে তাপমাত্রা দুই থেকে তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস পেতে পারে।
তিনি আরো বলেন, শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় কেবলমাত্র রাতের তাপমাত্রা কমে যেতে পারে এক থেকে দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত।
আগামী ১০ ডিসেম্বর থেকে ক্রমান্বয়ে তাপমাত্রা কমতে শুরু করবে বলে জানান এই আবহাওয়াবিদ।
তিনি বলেন, আমরা মনে করছি, তাপমাত্রা কমতে কমতে চলতি মাসে একবার অথবা দুইবার দেশের কোথাও কোথাও তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে যেতে পারে। এটি ডিসেম্বরের শেষ ভাগে হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
আবহাওয়া অফিস তাদের দীর্ঘ মেয়াদি পূর্বাভাসে জানিয়েছে, চলতি মাসের শেষ ভাগেই কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। অর্থাৎ তাপমাত্রা ছয় থেকে আট ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকতে পারে।
আবুল কালাম মল্লিক বলেন, ডিসেম্বরে দিন ও রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বেশি থাকবে।
আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, রাজশাহী, পাবনা, রংপুর, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ঢাকা, ফরিদপুর, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, সিলেট ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের ওপর দিয়ে পূর্ব-দক্ষিণপূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
দুর্ঘটনা এড়াতে এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে এক নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
বর্ষার অস্বাভাবিক আচরণে এবার শীত প্রায় স্থিতিশীল থাকবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ বলেন, এবার শুরু থেকেই বর্ষার আচরণ আনইউজুয়াল। সেই কারণে আমরা মনে করছি, শীত যেমন পড়ার কথা তেমন পড়বে না। তাপমাত্রা কিছুটা বেশি থাকবে।
সাধারণত জুন-জুলাই মাসে প্রচুর বৃষ্টি হয়। এবার বাংলাদেশে এই দুই মাসে বৃষ্টির পরিমাণ ছিলো তুলনামূলক কম। অক্টোবর-নভেম্বরের বেশি বৃষ্টি হয়েছে।
অধিদফতরের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, অক্টোবরে সারাদেশে স্বাভাবিকের চেয়ে ৩৫ দশমিক এক শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছিলো। নভেম্বরে চার বিভাগে বৃষ্টি বেশি হওয়ায় সার্বিকভাবে সারাদেশে স্বাভাবিকের চেয়ে ৬৫ দশমিক আট শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও বরিশাল বিভাগে বেশি বৃষ্টি হয়েছে। গত ১৭ নভেম্বর চাঁদপুরে দৈনিক সর্বোচ্চ ২১৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস।
স্বাআলো/এসএ