নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোরে কলেজছাত্রী মৌমিতা রানী দের খুনি সৌরভ বিশ্বাস পিকুলকে ১১ দিনেও আটক করতে পারেনি পুলিশ।
যদিও পুলিশ বলছে ঘটনার পর থেকে আসামি সৌরভ গাঁ ঢাকা দিয়েছে। কিন্তু সৌরভের পিতা পুলিশ সদস্য হওয়ায় মামলাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে নানা দেনদরবার শুরু করেছেন বলে বাদী অভিযোগ করেছেন।
উল্লেখ্য গত ১৯ জুলাই যশোর শহরের ওয়াপদাপাড়া বনবিথী লেনের সাকিবের ভাড়া বাড়ি থেকে মৌমিতার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহতের বাবা নারায়ন চন্দ্র দে জানিয়েছেন, আসামি সৌরভের পিতা রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাস একজন পুলিশ কনস্টেবল। এর আগে তিনি যশোর আদালতে চাকরি করেছেন। সে কারণে যশোর আইনজীবী, তাদের সহকারী, যশোরের পুলিশ প্রশাসন এমন কি আদালতে কর্মরত কর্মকর্তা কর্মচারীদের সাথে রবীন্দ্রনাথের শখ্যতা রয়েছে। বাদী নারায়নের মেয়ে মৌমিতাকে সৌরভ গোপনে বিয়ে করলেও তার পরিবার জানতো। আর সে কারণে মৌমিতাকে পুত্রবধূ হিসেবে মেনে নিতে তালবাহানা করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাস। পাশাপাশি মৌমিতাকে তালাক দেয়ার জন্য ছেলে সৌরভকে মারধরসহ নানা ধরনের চাপ সৃষ্টি করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। ফলে সৌরভ বাধ্য হয়ে মৌমিতা ছেড়ে দেয়ার জন্য চেষ্টা করে। কিন্তু মৌমিতাও তাকে স্ত্রী হিসেবে বাড়িতে নিয়ে সংসার করার জন্য সৌরভকে চাপ সৃষ্টি করেছিলেন বলে জানা গেছে। ফলে মৌমিতাকে বাড়িতে নিতে পারবে না বলে জানিয়ে দেয় সৌরভ। এই নিয়ে তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কয়েকদিন ধরে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। এরমধ্যেও ঘটনার কয়েকদিন আগে মৌমিতার ৫০ হাজার টাকা হাতে পেয়ে যান সৌরভ। আর ওই টাকাগুলো আত্মসাৎ করতেও নানা অপকৌশল অবলম্বন করে সৌরভ। ফলে মৌমিতাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। আর সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য ১৭ জুলাই পরিকল্পিতভাবে মৌমিতাকে হত্যা করে সৌরভ। ঘটনার দিন সন্ধ্যার পরে মৌমিতা প্রাইভেট পড়িয়ে বাসায় ফেরেন। এরপরই তার স্বামী সৌরভ শ্বাসরোধে মৌমিতাকে হত্যার পরে খাটের উপর ফেলে নিজের বাইসাইকেল নিয়ে ছিটকে পড়েন। কিন্তু এই ঘটনার আগে মৌমিতা তার মায়ের সাথে মোবাইলে কথা বলেছিলেন। কিন্তু ওই দুইদিন মোবাইলে কোনো যোগাযোগ করতে না পেরে ১৯ জুলাই সকালে তার বাবা নারায়ন চন্দ্র দে এবং তার ভাই আনন্দ দে মৌমিতার ভাড়া বাসায় কোঁজ করার জন্য আসেন। ঘরের বাইরে থেকে তালাবদ্ধ দেখে সন্দেহ হলে জানালা দিয়ে মৌমিতাকে খাটের উপর দেখতে পান। পরে থানা পুলিশের মাধ্যমে দরজার তালা ভেঙ্গে মৌমিতার লাশ উদ্ধার করা হয়। ওইদিনই এই ব্যাপারে নিহত মৌমিতার বাবা কোতোয়ালী থানায় মামলা করেন। কিন্তু গত ১১ দিনেও আসামি সৌরভকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।
মৌমিতার বাবা নারায়ন চন্দ্র দে জানিয়েছেন, আসামি সৌরভের বাবা পুলিশ সদস্য হওয়ায় তার সাথে যোগসাজসে নানা তালবাহানা করছেন তদন্ত কর্মকতা। পাশাপাশি মামলাটি ভিন্নখাতে নিতেও আসামি সৌরভের বাবা রবীন্দ্রনাথ নানা অপকৌশল অবলম্বন করছেন।
তবে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এই লিটন কুমার দাস বলেছেন, আসামি ভারতে চলে গেছে। তাই আটক করা সম্ভব হচ্ছে না।
স্বাআলো/এস