ভয়ংকর রূপে ফিরেছে করোনা, ভারত ভ্রমণে বিশেষ সতর্কতা

ঢাকা অফিস ঢাকা অফিস | June 10, 2025

প্রতিবেশী দেশ ভারতসহ কয়েকটি দেশে নভেল করোনাভাইরাস আবারো ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে। ২০২০ সালে মহামারি হিসেবে আবির্ভূত ভাইরাসটির নতুন নতুন ভ্যারিয়েন্টের দ্রুত সংক্রমণ ও মৃত্যুর ঘটনায় বাংলাদেশও উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে জরুরি সতর্কতা জারি করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।

সোমবার এক নির্দেশনায় ভারতসহ সংক্রমণপ্রবণ কয়েকটি দেশে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ভ্রমণ না করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ (সিডিসি) শাখা থেকে জারি করা সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, ওমিক্রনের নতুন সাব-ভেরিয়েন্ট এলএফ.৭, এক্সএফজি, জেএন-১ ও এনবি ১.৮.১ এর সংক্রমণ বিভিন্ন দেশে উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে। আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীদের মাধ্যমে এসব ভ্যারিয়েন্ট বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়ার প্রবল ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এই ঝুঁকি মোকাবিলায় দেশের সব স্থল, নৌ ও বিমানবন্দরে হেলথ স্ক্রিনিং এবং নজরদারি ব্যবস্থা জোরদার করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

দেশে আবারো করোনায় মৃত্যু, শনাক্ত ৩

স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. হালিমুর রশিদ স্বাক্ষরিত নির্দেশনায় আরো উল্লেখ করা হয়, দেশে প্রবেশের সব পয়েন্টে থার্মাল স্ক্যানার ও ডিজিটাল হ্যান্ড হেল্ড থার্মোমিটার ব্যবহার করে যাত্রীদের শরীরের তাপমাত্রা পরিমাপ নিশ্চিত করতে হবে। একইসঙ্গে স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে মাস্ক, গ্লাভস ও পিপিই মজুত রাখার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে করোনা প্রতিরোধ সংক্রান্ত নির্দেশনা ব্যাপকভাবে প্রচার করার ওপর গুরুত্বারোপ করে অধিদফতর। পাশাপাশি, জনগণের প্রতি ভারতসহ যেসব দেশে সংক্রমণ বেশি সেসব দেশে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ভ্রমণ পরিহার করার বিশেষ আহবান জানানো হয়েছে।

এদিকে, আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি) এর গবেষকেরা বলছেন, করোনার আরো দুইটি নতুন ধরন এক্সএফজি ও এক্সএফসি শনাক্ত হয়েছে, যেগুলো অমিক্রন জেএন-১ এর উপধরন এবং এদের সংক্রমণ ক্ষমতা তুলনামূলকভাবে বেশি। এই পরিস্থিতিতে জনসাধারণকে সর্বোচ্চ সতর্ক থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।

দেশে ফের করোনা শনাক্তের হার বেড়েছে, একদিনে ৯ জন আক্রান্ত

স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশনায় ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, দিনে অন্তত সাতবার বা প্রয়োজন অনুযায়ী সাবান দিয়ে অন্তত ২৩ সেকেন্ড সময় নিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাস করতে হবে। নাক ও মুখ ঢাকতে মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক। হাঁচি-কাশির সময় টিস্যু বা কাপড়ের মাধ্যমে নাক-মুখ ঢেকে রাখতে হবে। অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক বা মুখ স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। এছাড়া, আক্রান্ত ব্যক্তির কাছ থেকে কমপক্ষে তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

সন্দেহজনক কোভিড রোগীদের বিষয়ে নির্দেশনায় বলা হয়েছে, কেউ অসুস্থ বোধ করলে তিনি যেন নিজ বাড়িতে অবস্থান করেন এবং প্রয়োজন অনুযায়ী নিকটস্থ হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। অসুস্থ ব্যক্তিকে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে এবং জটিল পরিস্থিতিতে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) হটলাইনে (০১৪০১-১৯৬২৯৩) যোগাযোগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদফতর মনে করে, সময়মতো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং সর্বসাধারণের সতর্কতা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার মাধ্যমেই করোনার এই নতুন সংক্রমণের ঝুঁকি কার্যকরভাবে কমিয়ে আনা সম্ভব।

স্বাআলো/এস