ঘূর্ণিঝড় দেখতে সৈকতপাড়ে দর্শণার্থীদের ভিড়

জেলা প্রতিনিধি, কক্সবাজার: ঘূর্ণিঝড় রেমাল কক্সবাজার থেকে ৩৪০ কি.মি দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছে। দমকা হাওয়ার সাথে সাগরের উত্তাল ঢেউ আঁচড়ে পড়ছে সৈকতপাড়ে। আর এই দৃশ্য দেখতে ভিড় করেছেন স্থানীয় ও পর্যটকরা। তারা মোবাইল ফোনে ক্যামেরা বন্দি করে রাখছেন মুহূর্তটি।

এদিকে সমুদ্রে না নামতে মাইকিং করছেন ট্যুরিস্ট পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, সি সেইফ লাইফগার্ড ও বিচ কর্মীরা। তারা লাল পতাকা টাঙিয়ে, বাঁশি বাজিয়ে সমুদ্রের পানিতে থাকা পর্যটকদের উপরে উঠে আসতে অনুরোধ জানান। তবে কেউ কেউ মানছেন আবার কেউ কেউ মানছেন না। ছবি তুলতে গিয়ে সাগরের ঢেউয়ে তলিয়ে গেছে এক পর্যটকের মোবাইল ফোনো।

ঢাকার তেজগাঁও থেকে আসা শরীফ উদ্দিন তার দুই মেয়ে নিয়ে হাঁটু সমান পানিতে নামছেন। উত্তাল সাগরে নিষেধ থাকা সত্ত্বেও পানিতে নামার ব্যাপারে তিনি বলেন, টিকিট না পেয়ে কক্সবাজারে আজ থেকে যেতে হলো। এতে মেয়েরা আবদার করলো সৈকতের পরিস্থিতি দেখবে। তাই হাঁটু পানিতে পা ভেজাতে নামলেন তারা। তবে বাঁশির আওয়াজ শুনে উঠে যান তারা।

কক্সবাজারের টেকপাড়া এলাকার হাসান বলেন, সমুদ্র উত্তাল এর চেয়ে বেশি দেখেছি। সাগরের বড় বড় ঢেউ প্রতিনিয়ত দেখছি। তাই ভয় করে না। তবে স্রোতের টান দেখে উঠে যাচ্ছি উপরে।

ঢাকা মিরপুর থেকে কক্সবাজারে ঘুরতে আসা পর্যটক রাহী ও পায়েল জানান, ২ দিন হলো কক্সবাজারে আসা। এখানে এসে ঘূর্ণিঝড়ের ফাঁদে পড়ে গেলাম। রুমে বসে থাকতে বিরক্ত লাগছিলো তাই সমুদ্র দেখতে ছুটে আসা।

পর্যটক দম্পতি রাহেলা কামাল ও মোস্তফা কামাল বলেন, আসলে সাগরের এই রূপ আগে কখনো দেখা হয়নি। সত্যিই অনেক ভাল স্মৃতি নিয়ে ফিরবো কক্সবাজার থেকে। সাগরে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে আমরা চলাফেরা করছি।

এদিকে কক্সবাজার সমুদ্রে ৯ নম্বর মহাবিপৎ সংকেত বলবৎ রেখেছে আবহাওয়া অফিস। চার থেকে পাঁচ ফুট বেড়েছে সমুদ্রের পানির উচ্চতা।

কক্সবাজারের সহকারি আবহাওয়াবিদ আবদুল হান্নান বলেন, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ঘূর্ণিঝড় রেমাল ৩৪০ কি.মি দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে। এটি প্রতিনিয়ত উত্তরদিকে অগ্রসর হচ্ছে। আজ রোববার সন্ধ্যা বা মধ্যরাতে উপকূলে আঘাত হানতে পারে।

সকালে সৈকতের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে আসেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান। তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন। আপদকালীন সময়ে সার্বিক যোগাযোগ রক্ষায় কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। কন্ট্রোল রুমের মোবাইল নম্বর হলো ০১৮৭২৬১৫১৩২। ৬৩৮টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পর্যাপ্ত শুকনো খাবার মজুদ আছে।

স্বাআলো/এস

Share post:

Subscribe

spot_imgspot_img

Popular

More like this
Related

বাধ্যতামূলক ছুটিতে ৬ ব্যাংকের এমডি

আলোচিত এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে থাকা চারটিসহ মোট ছয়...

সংসার পাতলেন তাহসান, ভাঙলো বুঝি মিথিলার!

ঘটনা ২০১৭ সালের। বিনোদন জগতের ঢালিউড অভিনেতা-গায়ক তাহসান খান...

পুকুরে ভাসছিলো যুবকের অর্ধগলিত লাশ

জেলা প্রতিনিধি, নোয়াখালী: জেলার সদর উপজেলার একটি পুকুর থেকে...

১৮ কোটি মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে চাই: সিইসি

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন...