নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোর-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি কাজী নাবিল আহমেদ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশের ঘোষণা দিয়েছেন। সেই স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার অন্যতম উপকরণ শিক্ষা। প্রধানমন্ত্রী সে কারণে শিক্ষাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েছেন। আমাদের শিক্ষাক্রমে পরিবর্তন আনা হয়েছে। যাতে শিক্ষার্থীরা কেবল পুঁথিগত বিদ্যা না শেখে। তারা যেনো পারিপার্শ্বিক সব অবস্থা থেকে সফলভাবে বিদ্যা আহরণ করতে পারে। নিজেদের আধুনিক ও তথ্যপ্রযুক্তির যুগের উপযোগী করে গড়ে তুলতে পারে। শুধু দেশের নাগরিক নয়, বিশ্বনাগরিক হিসেবে তৈরি করতে পারে।
সোমবার (১৮ মার্চ) ডা. আব্দুর রাজ্জাক মিউনিসিপ্যাল কলেজ আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় কাজী নাবিল আহমেদ এসব কথা বলেন।
তিনি তৃতীয়বারের মতো যশোর-৩ (সদর) আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ায় কলেজ কর্তৃপক্ষ এই সংবর্ধনা এবং ২১তম আন্তঃহাউজ ও পঞ্চম আন্তঃবিভাগ বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে এমপি কাজী নাবিল বলেন, বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের মধ্যে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা তুলনামূলক বেশি। এই জনসংখ্যাকে কাজে লাগিয়ে আগামীতে মধ্যম আয়ের দেশ থেকে উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তরিত করতে আমাদের একযোগে কাজ করতে হবে।
যশোরে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন
তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করে বলেন, দেশের মানুষ জননেত্রী শেখ হাসিনাকে পরপর চার বার এবং মোট পাঁচবার বিপুল ভোটে প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছেন। চার বছর আগে সারা পৃথিবী কোভিড আক্রান্ত হয়। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশে কোভিড মহামারি দক্ষ হাতে আমরা মোকাবিলা করেছি। দেশের কোটি কোটি মানুষকে টিকার আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে।
শেখ হাসিনা দেশের প্রান্তিক মানুষের কথা সব সময় ভাবেন’ উল্লেখ করে এমপি নাবিল বলেন, ২০০৯ সালে আমাদের জিডিপি ছিল মাত্র ৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে। বিদ্যুৎ উৎপাদন ছিলো তিন হাজার মেগাওয়াট, যা বর্তমানে ২৫ হাজার মেগাওয়াট। আমাদের মাথাপিছু আয়ও বেড়েছে অনেক। প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা বাড়িয়েছেন। আশ্রয়ণ প্রকল্প, ভূমিহীন মানুষকে ভূমি প্রদান, শিক্ষা উপবৃত্তি চালু করেছেন। সামাজিক সুরক্ষার আওতায় বয়স্ক ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা, বিধবা ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, টিসিবি কার্ডসহ ১৩০ রকমের ভাতা দেয়া হচ্ছে। গৃহহীনরা জমিসহ ঘর পাচ্ছেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী চান দেশের সুষম উন্নয়ন। সে কারণে সারাদেশের মতো যশোরেও প্রভূত উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করেছেন। তিনি যশোরে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল কলেজ, শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কসহ স্কুল-কলেজ, রাস্তার উন্নয়ন করেছেন।
যশোর আব্দুর রাজ্জাক মিউনিসিপ্যাল কলেজকে যশোরের বেসরকারি কলেজগুলোর অন্যতম উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শতাধিক শিক্ষক রয়েছেন। আপনাদের যে দাবি, কলেজটি সরকারিকরণের, তা অত্যন্ত যৌক্তিক। আপনারা প্রক্রিয়া শুরু করলে আপনাদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে সেই কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে আমার সর্বাত্মক সহযোগিতা থাকবে।
এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আমাদের পারিবারিক সম্পর্ক জড়িয়ে রয়েছে। কলেজটি প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করেন যশোর-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলী রেজা রাজু, আমার চাচা। কলেজটিতে অর্থায়ন করেন বিশিষ্ট শিল্পপতি যশোরের সন্তান, কনকর্ড গ্রুপের চেয়ারম্যান এসএম কামাল উদ্দিন। তিনি আমার বাবার বাল্যবন্ধু। তারা যশোরে একসঙ্গে স্কুলে ও কলেজে পড়াশুনা করেছেন। পরিণত বয়সেও তাদের সেই বন্ধুত্ব অটুট ছিলো। তাদের প্রতি আমার শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা।
সংর্বধনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কলেজ অধ্যক্ষ জেএম ইকবাল হোসেন।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম আফজাল হোসেন, কলেজের শিক্ষক প্রতিনিধি তরফদার কায়সার পারভীন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন কলেজের উপাধ্যক্ষ মঞ্জুরুল ইসলাম।
সংবর্ধিত সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমদেকে পুষ্পার্ঘ্য ও সংবর্ধনা স্মারক তুলে দেন কলেজ অধ্যক্ষ।
এ সময় অন্যদের মধ্যে জেলা শ্রমিক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও জেলা পরিষদ সদস্য জবেদ আলী, আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক লুৎফুল কবীর বিজু ও আওয়ামী লীগ নেতা আবু মুসা মধু প্রমুখ।
স্বাআলো/এস