সম্পাদকীয়: সরকারি চাকরিতে অনুমোদিত পদ ১৯ লাখ ১৫১টি। এর মধ্যে শূন্য পদ রয়েছে তিন লাখ ৭০ হাজার ৪৪৭টি। ২৮ মে সচিবালয়ে গণমাধ্যম কেন্দ্রে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত ‘বিএসআরএফ সংলাপে’ অংশ নিয়ে জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন।
এতো পদ শূন্য থাকা সত্তেও দেশ বেকারত্বে জর্জরিত। আর তাই চাকরি না পেয়ে হতাশাগ্রস্থ হয়ে বছর দুয়েক আগে যশোরের চৌগাছা উপজেলার জলকার-মাধবপুর গ্রামের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী হাবিবুর রহমান (২৭) গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করেন। এমন ঘটনা শুধু হাবিবুর রহমানের নয়। অভিশপ্ত বেকারত্বের কারণে বিপুল শিক্ষিত তরুণরা হতাশাগ্রস্ত জীবনযাপন করছে।
দেশে বেকারত্বের হার দিন দিন বাড়ছে। দক্ষ অদক্ষ বেকারের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি পাচ্ছেন না দেশের শিক্ষিত যুব সমাজ। যা বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল একটি দেশের অর্থনীতির জন্য মারাত্মক হুমকি স্বরূপ।
সরকারি চাকরিতে শূন্য পদ তিন লাখ ৭০ হাজার
ছয় বছর আগের এক জরিপে দেখা যায়, দেশে বেকারের সংখ্যা ছিলো ২৬ লাখ। এর মধ্যে পুরুষের সংখ্যা ছিলো ১৪ লাখ ও নারীর সংখ্যা ছিলো ১২ লাখ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর এক জরিপে দেখা যায় জাতীয় বেকারত্বেও হার ৪ দশমিক ২ শতাংশ। এর মধ্যে উচ্চ শিক্ষিত বেকারত্বের হার সবচেয়ে বেশি। তারা তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি না পাওয়ায় দেশের অর্থনীতিতে কোনো ভূমিকা পালন করতে পারছেন না।
এক তরুণ তার হৃদয় উৎসারিত আর্তিতে উল্লেখ করেছেন, উচ্চশিক্ষা যেনো তাদের চাকরি পাওয়ার নিশ্চয়তা দিতে পারছে না। অধিকাংশ শিক্ষিত তরুণরা তাদের পছন্দ অনুযায়ী চাকরি না পেয়ে দেশ ত্যাগে বাধ্য হচ্ছেন। প্রতিনিয়ত দেশ থেকে বিদেশে মেধা পাচার হয়ে যাচ্ছে। ফলে দেশ হয়ে যাচ্ছে মেধাশূন্য। এমনকি তারা বিদেশে চাকরি নিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস করার পরিকল্পনা গ্রহণ করছেন। আবার অনেকে বেকারত্বেও অসহ্য যন্ত্রণা সইতে না পেরে বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়ছেন। অনেকে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছেন। চাকরিটা কিন্তু এখনো সোনার হরিণই থেকে গেছে। বেকাররা যাতে সহজে চাকরিতে ঢুকতে পারে সে ব্যবস্থা সরকারকে নিতে হবে। নতুবা বেকারত্বের ভারে দেশটা ভারাক্রান্ত হয়ে পড়বে।
স্বাআলো/এস