বিনোদন

হাসপাতাল ভাইকে ভর্তি নেয়নি, মৃত্যুর পর মাহির ক্ষোভ

বিনোদন ডেস্ক বিনোদন ডেস্ক | July 1, 2025

ছোট পর্দার পরিচিত মুখ অভিনেত্রী সামিরা খান মাহি তার কাজিন আবু শাহেদ রাসেলের মৃত্যুর ঘটনাকে হত্যাকাণ্ড হিসেবে উল্লেখ করে দেশের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা ব্যবস্থার তীব্র সমালোচনা করেছেন।

শনিবার (২৯ জুন) সড়ক দুর্ঘটনায় রাসেল মারা যান বলে জানান মাহি। তিনি অভিযোগ করেছেন, দুর্ঘটনা পরবর্তী সময়ে তার কাজিন যথাযথ চিকিৎসা পায়নি এবং হাসপাতালগুলো টাকা-পয়সার হিসাব করায় জীবন রক্ষায় দেরি হয়েছে।

রবিবার (২৯ জুন) গভীর রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক আবেগঘন পোস্টে সামিরা খান মাহি লিখেছেন, তার কাজিন একটি ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হন। একটি নোয়া গাড়ি তাকে দু-তিন বার ধাক্কা দিয়ে পুকুরে ফেলে দেয়। গাড়িটি পানিতে ডুবে যায় এবং প্রায় ১৫ মিনিট পর দুজন ব্যক্তি গাড়ির কাঁচ ভেঙে তাকে পানির নিচ থেকে উদ্ধার করেন। কিন্তু এরপরের ঘটনা আরও ভয়ংকর বলে উল্লেখ করেন মাহি।

অভিনেত্রী অভিযোগ করেন, প্রথমে একটি হাসপাতাল আবু শাহেদ রাসেলকে ভর্তি নিতে চায়নি। তাদের কাছে রোগীর পরিচয়, পরিবার এবং বিল পরিশোধের নিশ্চয়তা বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। একজন মানুষের জীবন তাদের কাছে মূল্যবান ছিল না। এরপর তাকে সরকারি হাসপাতালে নেওয়া হলেও সেখানকার ব্যবস্থাপনা অগোছালো ছিল এবং তিনি যথাযথ চিকিৎসা পাননি বলে মাহি দাবি করেন।

এইচএসসি পরীক্ষা দিতে গিয়ে যেভাবে নিখোঁজ হলেন মাহিরা

সামিরা মাহি প্রশ্ন তুলেছেন, প্রথমে একজন মানুষের জীবন রক্ষা করা উচিত, নাকি টাকা-পয়সার হিসাব? তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, একজন মানুষ রাস্তায় পড়ে থাকে, অথচ কোনো গাড়িও দাঁড়ায় না এটা কেমন মানবতা? মানুষ কি সত্যিই এতটা নির্দয় হয়ে গেছে?

তিনি তার পোস্টে স্বাস্থ্যব্যবস্থা এবং সমাজের মনুষ্যত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। ভাই হারানোর বেদনা প্রকাশ করে মাহি বলেছেন, তিনি চান না অন্য কারও পরিবারের সাথে এমনটা হোক। তিনি মানবতা ফিরে আসার এবং মানুষের প্রাণকে অগ্রাধিকার দেওয়ার আহবান জানিয়েছেন।

দেশের একটি গণমাধ্যমকে মাহি জানান, তার কাজিন আবু শাহেদ রাসেল শনিবার ফেনী থেকে ঢাকা ফেরার পথে কুমিল্লার ময়নামতি এলাকা অতিক্রম করার পর দুর্ঘটনার শিকার হন। রাত ১২টা ১৫ মিনিটের দিকে একটি বড় গাড়ি পেছন থেকে তার গাড়িকে ধাক্কা দিয়ে পুকুরে ফেলে দেয়। পুকুরে প্রচুর পানি ছিল এবং রাস্তা থেকে সেটি দেখা যাচ্ছিল না। দুর্ঘটনার সময় আশেপাশে আর কোনো গাড়ি ছিল না। একটি মোটরসাইকেল আরোহী তাকে দেখে উদ্ধার করেন এবং নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেই হাসপাতাল ভর্তি না নিলে পাশের অন্য একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে প্রায় এক ঘণ্টা জীবিত ছিলেন রাসেল।

কাঁদতে কাঁদতে মাহি বলেন, হাসপাতালে জানানো হয়েছে ইন্টার্নাল ব্লিডিংয়ের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। অক্সিজেন দেওয়া হলেও তা ধরে রাখতে পারছিল না, কারণ নাক-মুখ দিয়ে রক্ত পড়ছিল।

জানা গেছে, দুর্ঘটনার সময় শাহেদের কাছে সামিরা মাহির বাগদত্তা সাদাত শাফি নাবিলের ভিজিটিং কার্ড ছিল। উদ্ধারকারীরা সেই কার্ড থেকে শাফির মোবাইল নাম্বার নিয়ে যোগাযোগ করেন এবং শাহেদের মৃত্যুর খবর দেন।

ভাই হারিয়ে শোকাহত মাহি আইনি পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে বলেন, কোন গাড়ি ধাক্কা দিয়েছে, তা তারা জানেন না। পেছন থেকে ধাক্কা দিয়ে গাড়িটি চলে গেছে। কোন গাড়ি, কী গাড়ি, কিছুই জানা নেই। তাছাড়া রবিবার রাতে দাফন সম্পন্ন হয়েছে। আইনি পদক্ষেপ নিতে গেলে লাশের ময়নাতদন্ত প্রয়োজন হয়, যা তারা চাননি।

স্বাআলো/এস

Shadhin Alo