সিলেটের বিশ্বনাথে চাঞ্চল্যকর স্কুলছাত্র সুমেল মিয়া (১৮) হত্যা মামলায় ৮ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ৭ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসাথে মামলার বাকি আসামিদের খালাস দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (৩০ জুলাই) সিলেটের মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) কামাল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন: সাইফুল, নজরুল, সদরুল, সিরাজ, জামাল, শাহিন, আব্দুল জলিল ও আনোয়ার।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন: ইলিয়াছ, আব্দুন নুর, জয়নাল, আশিক, আছকির, ফরিদ ও আকবর।
ঘটনার প্রেক্ষাপট:
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০২১ সালের ১ মে বিশ্বনাথের চৈতননগর গ্রামে যুক্তরাজ্য প্রবাসী সাইফুল আলম তার লোকজন নিয়ে নজির উদ্দিনের মালিকানাধীন ক্ষেতের জমি থেকে জোর করে রাস্তায় মাটি তুলতে যান। এ সময় জমির মালিক নজির উদ্দিন, তার চাচাতো ভাই মানিক মিয়া ও ভাতিজা দশম শ্রেণির ছাত্র সুমেল মিয়া এতে বাধা দেন।
এ নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে বাগবিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে সাইফুল আলমের বন্দুকের গুলিতে সুমেল মিয়া ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। এ সময় সুমেলের বাবা ও চাচাসহ আরও চারজন গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন।
মামলা ও তদন্ত:
এ ঘটনায় নিহত সুমেলের চাচা ইব্রাহিম আলী সিজিল বাদী হয়ে ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে বিশ্বনাথ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালীন বিশ্বনাথ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) রমা প্রসাদ চক্রবর্তী দীর্ঘ তদন্ত শেষে ৩২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন।
মামলায় মোট ২৩ জন সাক্ষী সাক্ষ্য প্রদান করেন। দীর্ঘ শুনানি ও যুক্তিতর্ক শেষে গত ১৩ জুলাই আদালত রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেছিলেন। রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আজ আদালতপাড়ায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।
মামলার ৩২ জন আসামির মধ্যে প্রধান আসামি সাইফুল আলম গ্রেপ্তারের পর থেকে প্রায় পৌনে চার বছর ধরে কারাগারে আছেন। রায় ঘোষণার দিন ৩০ জন আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়। এজাহারভুক্ত আসামি মামুনুর রশীদ নামের একজন এখনও পলাতক রয়েছেন।
স্বাআলো/এস