নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোরে দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবিতে স্বামী ও তার প্রেমিকাসহ দুইজনের বিরুদ্ধে আদালতে দেয়া অভিযোগটি নিয়মিত মামলা হিসেবে রেকর্ড করেছে থানা পুলিশ।
অভয়নগর উপজেলার পায়রাহাট গ্রামের মৃত শাহজাহানের মেয়ে শারমিন সুলতানা সাথী ১৫ এপ্রিল যশোর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এই এই মামলাটি করেছিলেন।
বুধবার (১৭ এপ্রিল) কোতোয়ালী থানায় এই মামলাটি রেকর্ড করা হয়।
আসামিরা হলেন, সদর উপজেলার গাইদগাছি গ্রামের আবু তালেবের ছেলে শেখ জিন্নাহ আহম্মেদ এবং একই গ্রামের মৃত কাজী গোলাপের স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা।
বাদী শারমিন সুলতানা সাথী জানিয়েছেন, বিয়ের পর থেকেই যৌতুক দাবিতে সাথীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছিলেন তার স্বামী জিন্নাহ। পাশাপাশি পরকীয়ায় আসক্ত হয়েছেন। একই গ্রামের মৃত কাজী গোলাপের স্ত্রী রাজিয়া সুলতানার সাথে পরকীয়া সম্পর্ক করে প্রতিনিয়ত বাড়িতে এসে সাথীকে নির্যাতন শুরু করেন জিন্নাহ। তবে বিয়ের পরই সাথীকে চাপ প্রয়োগ করে তার পিতার বাড়ি থেকে দেড় লাখ টাকা যৌতুক হিসেবে গ্রহণ করেন তার স্বামী। শুধু তাই নয় সাথীর পিতার দেয়া সোনার গহনা বিক্রি করে আরো চার লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এভাবে যৌতুকের দাবিতে মারধরের কারণে ২০২২ সালে যৌতুক নিরোধ আইনে স্বামী জিন্নাহর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছিলেন সাথী। পরে মামলার ভয়ে আর কােনো দিন যৌতুক দাবি করিবে না বা নির্যাতন করিবে না অঙ্গীকার করে স্ত্রী ও মেয়ে জিনিয়াকে নিয়ে সংসার করার শর্তে সাথী সেই মামলাটি প্রত্যাহার করে নেন। কিন্তু রাজিয়ার সাথে পরকীয়ার কারণে সম্প্রতি জিন্নাহর পথের কাঁটা হিসেবে সামনে আসেন সাথী। ফলে সাথীকে সরিয়ে রাজিয়াকে বিয়ের করার উদ্দেশ্যে আবারো দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবিতে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে। তারই অংশ হিসেবে গত ৫ এপ্রিল রাত সাড়ে ১১টার দিকে দুই লাখ যৌতুক দাবিতে সাথীকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করেন জিন্নাহ। এসময় তার চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে এলে হত্যার হুমকি দেয়া হয়। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে সাথীকে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখানে ওই মারধরে সাথীর মাথায় আঘাত করলে পাঁচটি সেলাই দিতে হয়। কিছুটা সুস্থ হয়ে থানায় গেলে পুলিশ মামলা গ্রহণে অস্বীকৃতি জানায়। ফলে বাধ্য হয়ে আদালতে এই ঘটনায় অভিযোগ দায়ের করেন সাথী। আদালতের নির্দেশে ১৭ এপ্রিল থানা পুলিশ মামলাটি গ্রহণ করে।
স্বাআলো/এস